ব্রাজিলের বিদায়, সেমিতে প্যারাগুয়ে

Looks like you've blocked notifications!
ট্রাইবেকারে ৪-৩ গোলে ব্রাজিলকে হারিয়ে সেমিতে প্যারাগুয়ে। খেলা শেষে প্যারাগুয়ে দলের খেলোয়াড়রা উল্লাসে মেতে উঠে। ছবি : রয়টার্স

কোপা আমেরিকায় কোয়ার্টার ফাইনালে গতবারের মতো এবারো প্যারাগুয়ের কাছে ধরাশায়ী হলো ব্রাজিল। নেইমারবিহীন খেলায় টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হেরে বিদায় নিতে হলো দুঙ্গার দলকে। এতে ব্রাজিলের পরিবর্তে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার সঙ্গে লড়বে নিজ গ্রুপের প্যারাগুয়ে। দুঙ্গার দলের বিদায়ে উত্তেজনাপূর্ণ সেমিফাইনাল থেকে বঞ্চিত হলো সারা বিশ্ব।

রোববার বাংলাদেশ সময় ভোররাত সাড়ে ৩টায় শুরু হওয়া খেলায় ব্রাজিলকে তারকা খেলোয়াড় নেইমারকে ছাড়াই মাঠে নামতে হয়েছে। খেলার শুরু থেকে আক্রমণ শাণিত করে ব্রাজিল। বিশেষ করে নেইমারের পরিবর্তে মাঠে নামা রবিনহো দর্শকের চাহিদা মেটাতে বেশি সময় নেননি।

রক্ষণভাগের খেলোয়াড় দানিয়েস আলভেসের পাস থেকে প্রথমার্ধের ১৫ মিনিটের মাথায় গোল করে বসেন রবিনহো। গোল খেয়ে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা আক্রমণের মাধ্যমে নিজেদের মেলে ধরার চেষ্টা করে প্যারাগুয়ে। উভয় দলের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের মাধ্যমে প্রথমার্ধের খেলা ১-০-তে এগিয়ে থাকে দুঙ্গার দল। তখন মনে হচ্ছিল, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার উত্তেজনাপূর্ণ সেমিফাইনাল হতে যাচ্ছে।

কিন্তু না, দ্বিতীয়ার্ধে নিজেদের আরো দ্বিগুণ শক্তিশালী করে খেলায় ফিরে আসে প্যারাগুয়ে। চলে কয়েক দফা আক্রমণ। কয়েকটি শট করেও গোল পাওয়া যাচ্ছিল না। ঠিক সে মুহূর্তে ব্রাজিলের অধিনায়ক ডি সিলভার হাতে বল লাগায় পেনাল্টির সুযোগ পায় প্যারাগুয়ে। খেলার ৭২ মিনিটের মাথায় প্যারাগুয়ের স্ট্রাইকার গঞ্জালেজ ব্রাজিলের জালে বল পাঠিয়ে খেলায় সমতায় ফেরান। এর পরে চলে উভয় দলের সমান আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে উভয় দল গোল করতে ব্যর্থ হলে খেলা ট্রাইব্রেকার পর্যন্ত গড়ায়। চরম উত্তেজনার পর ট্রাইব্রেকারের শুরুতে উভয় দলের দুটি করে সমান সমান গোল থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয় ব্রাজিল।

শেষ পর্যন্ত আবারো প্যারাগুয়ের গোলে বিদায় নিয়ে কোপা আমেরিকার মিশন শেষ হয়ে যায় ব্রাজিলের। সে সঙ্গে শেষ হয় বিশ্বকাপের মতো দুঙ্গার দলের আরো একটি ব্যর্থ মিশন। গত আসরের মতো এবারো ব্রাজিলের সামনে বাধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়ালো প্যারাগুয়ে। অন্যদিকে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হয়ে আবার আসতে হলো নিজ গ্রুপের প্যারাগুয়েকে।

এদিকে, গত আসরেও এই কোয়ার্টার ফাইনালেই পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের পেনাল্টিতে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে সেমি নিশ্চিত করেছিল প্যারাগুয়ে। এবার কোপা আমেরিকায় শক্তিশালী দল হলেও গ্রুপ পর্বে কোনোরকম পারফর্ম করে কোয়ার্টার নিশ্চিত করেছে ব্রাজিল। সেমিফাইনালে যেতে সেলেকাওদের জন্য এটি ছিল কঠিন পরীক্ষা। 

ব্রাজিল গ্রুপ পর্বে পেরু ও ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে একই (২-১) ব্যবধানে কষ্টার্জিত জয় পেয়েছিল। তবে মাঝে কলম্বিয়ার বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে মনোবল হারিয়ে ফেলে দুঙ্গার শিষ্যরা। আর সে ম্যাচেই ঘটে ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় বিপত্তি। ম্যাচ শেষে কলম্বিয়ান ফুটবলার জেইসন মুরিলোকোকে বল দিয়ে আঘাত করায় রেফারি কর্তৃক লাল কার্ড দেখেন দলের মূল তারকা নেইমার। পরে বার্সেলোনা তারকাকে জাতীয় দলের হয়ে চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। সে সঙ্গে কোপার আসর থেকে ছিটকে পড়েন এ সেনসেশন।

ব্রাজিল অধিনায়কের এ অনুপস্থিতিতে মূল একাদশে স্থান করে নেন ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ভালো খেলা অভিজ্ঞ রবিনহো। তাঁর হাত ধরে ম্যাচের শুরুতে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। 

২০১৪ বিশ্বকাপে বাজে পারফরম্যান্স করা প্যারাগুয়েও ম্যাচে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়েছে ভালোভাবে। কোচ রামোন ডিয়াজের ‍অধীনে দলটি গ্রুপ পর্বে অসাধারণ পারফর্ম করেছে। জ্যামাইকার বিপক্ষে জয়ের পাশাপাশি শক্তিশালী আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ের বিপক্ষে ড্র করেছে দুবারের কোপা চ্যাম্পিয়নরা। ২০১১ কোপা আসরে উরুগুয়ের কাছে ফাইনালে হেরে শিরোপাবঞ্চিত হতে হয় প্যারাগুয়েকে। তবে কোয়ার্টারের লড়াইয়ে নেইমারবিহীন ব্রাজিলের বিপক্ষে বেশ উদীপ্ত ছিল দলটি।