ভারতীয় ক্রিকেটের আরেকটি লজ্জা
গত সোমবার কটকের বারাবাতি স্টেডিয়ামে দর্শকের উচ্ছৃঙ্খল আচরণে কলঙ্কিত হয়েছিল ভারতের ক্রিকেটাঙ্গন। বোতল-বৃষ্টির লজ্জাজনক ঘটনায় দুই দফায় প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ রাখতে হয়েছিল ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি। তার রেশ শেষ না হতেই নতুন কলঙ্কে ডুবল ভারতীয় ক্রিকেট। চরম অব্যবস্থাপনার কারণে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে খেলা হতে পারেনি। পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে হয়েছে টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি। তাই প্রোটিয়াদের সিরিজ জয়ের ব্যবধান ২-০।
পশ্চিমবঙ্গ ক্রিকেট ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক প্রধান জগমোহন ডালমিয়া ছিলেন ইডেনের এই ম্যাচের কেন্দ্রবিন্দুতে। সদ্যপ্রয়াত এই ক্রিকেট প্রশাসকের প্রতি উৎসর্গ করার কথা ছিল ম্যাচটি। কিন্তু ডালমিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলির ম্যাচটি লজ্জায় ফেলে দিয়েছে ভারতের ক্রিকেটকে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আধঘণ্টার মতো বৃষ্টি হয়েছিল কলকাতায়। খেলা শুরু হওয়ার কথা ছিল স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায়। কিন্তু ভেজা মাঠের কারণে একটি বলও গড়াতে পারেনি। কয়েক দফা মাঠ পরিদর্শন শেষে রাত সাড়ে ৯টার দিকে খেলা পরিত্যক্তের ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়েছেন ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড।
বৃষ্টি থামার প্রায় আট ঘণ্টা পরও মাঠ ভেজা থাকায় কিউরেটর প্রবীর মুখোপাধ্যায়ের ওপরে ভীষণ ক্ষুব্ধ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের (সিএবি) কর্মকর্তারা। তাঁদের অভিযোগ, ভারি বর্ষণের পূর্বাভাস থাকলেও সকাল থেকে পুরো মাঠ ঢেকে রাখার ব্যবস্থা করেননি প্রবীর। বৃষ্টির সময় শুধু পিচ আর বোলারদের রানআপের জায়গায় কাভার ছিল। তাই রাতেও ভেজা মাঠ খেলার উপযোগী করে তুলতে পারেনি গ্রাউন্ডসম্যানরা। খেলা পরিত্যক্ত হওয়ায় হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার ক্রিকেটভক্তকে।
ভারতের অন্যতম সেরা ক্রিকেট মাঠ ইডেন গার্ডেন্সের এই চরম অব্যবস্থাপনা শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে দেশটিকে। ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড ইডেন সম্পর্ক নেতিবাচক রিপোর্ট দিতে পারেন আইসিসির কাছে। আর তাহলে আগামী বছরের ৩ এপ্রিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল ইডেনে হতে পারবে কি না, তা নিয়ে এখনই শঙ্কায় ভারতের ক্রিকেট কর্মকর্তারা।
ডালমিয়ার মৃত্যুর পর দ্বিতীয়বারের মতো ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন শশাঙ্ক মনোহর। সততা আর সাদাসিধে জীবনের কারণে ভারতীয় ক্রিকেটের সম্মানের আসনে থাকলেও বিসিসিআই সভাপতি হিসেবে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই তিনি অস্বস্তিতে। ইডেন-কাণ্ডের কারণে সিএবি প্রধানের দায়িত্ব নিতে যাওয়া সৌরভ গাঙ্গুলীও নিশ্চয়ই স্বস্তিতে নেই!