ভবিষ্যৎ তারকার মঞ্চ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ
১৯৮৮ সালে ব্রায়ান লারা বা ইনজামাম-উল-হকের নাম হয়তো খুব কম ক্রিকেট-ভক্তই জানতেন। সে বছর প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রেখেছিলেন দুই ক্রিকেট-তারকা, খেলেছিলেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের প্রথম আসর। ‘ছোটদের বিশ্বকাপ’ নামে পরিচিত এই প্রতিযোগিতায় ঝলক দেখিয়েই তাঁরা পরবর্তীতে নজর কেড়েছিলেন ক্রিকেট বিশ্বের। আর এখন তো তাঁরা কিংবদন্তি। শুধু লারা-ইনজামাম নন, পরবর্তীতে অনেক তারকা নিজের আগমনী বার্তা জানিয়েছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে। এই প্রতিযোগিতা যেন ভবিষ্যৎ তারকা তৈরির একটা মঞ্চ।
লারা-ইনজামাম থেকে শুরু করে হাল আমলের মুস্তাফিজুর রহমান, কাগিসো রাবাদারাও নিজেদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছিলেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে। বুধবার থেকে বাংলাদেশে শুরু হতে যাওয়া অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ১১তম আসর খেলতে আসা তরুণ ক্রিকেটারদের চোখেও রাবাদা-মুস্তাফিজদের মতো জাতীয় দলে জায়গা করে নেওয়ার স্বপ্ন। এখন হয়তো এই তরুণ ক্রিকেটারদের নাম খুব কম মানুষই জানেন। কিন্তু এখান থেকেই একদিন হয়তো বেরিয়ে আসবেন আগামী দিনের বিরাট কোহলি, সাকিব আল হাসান, হাশিম আমলাদের মতো তারকা ক্রিকেটাররা।
১৯৮৮ সালে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছিল অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। এরপর দীর্ঘ ১০ বছরের বিরতির পর ১৯৯৮ সালে হয়েছিল দ্বিতীয় আসর। তার পর থেকে প্রতি দুই বছর পরপর অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘ছোটদের বিশ্বকাপ’। আর প্রায় প্রতি আসর শেষেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খুঁজে পেয়েছে নতুন নতুন তারকাদের।
১৯৯৮ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে খেলেছিলেন ক্রিস গেইল, হরভজন সিং। ২০০০ সালের আসর থেকে এসেছিল একঝাঁক তারকা। অস্ট্রেলিয়ার মাইকেল ক্লার্ক, মিচেল জনসন, শন মার্শ ও শেন ওয়াটসন, ভারতের যুবরাজ সিং, নিউজিল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রায়েম স্মিথ সেবারই প্রথমবারের মতো খেলেছিলেন কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়।
বাংলাদেশের বর্তমান দলের তিন নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল আর মুশফিকুর রহিমও প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছিলেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে। ২০০৬ সালের ‘ছোটদের বিশ্বকাপে’ খেলেই এখন তাঁরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তারকা। বাংলাদেশের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও ২০০২ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে খেলেছিলেন। ২০১২ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে খেলে পরবর্তী সময়ে জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ, সৌম্য সরকার, আবু হায়দাররা। আর বর্তমান সময়ের অন্যতম ‘সেনসেশন’ মুস্তাফিজ খেলেছিলেন ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে। এবারের বিশ্বকাপ থেকেও হয়তো বেরিয়ে আসবেন আগামী দিনের সাকিব-মুস্তাফিজ-যুবরাজ-ক্লার্ক-ম্যাককালামদের মতো তারকারা।
নয়টি টেস্ট দল ছাড়াও আইসিসির সাতটি সহযোগী দেশ অংশ নিচ্ছে এবারের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে। ২৭ জানুয়ারি থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশের পাঁচটি শহরের আটটি ভেন্যুতে ব্যাট-বলের লড়াইয়ে নামবেন আগামী দিনের ক্রিকেট-তারকারা।