রজার মিলার প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’
রজার মিলার কথা মনে আছে? ফুটবলপ্রেমীদের তো ভুলে যাওয়ার কথা নয়। ১৯৯০ বিশ্বকাপে ক্যামেরুনের চমকপ্রদ সাফল্যের প্রধান স্থপতির সামনে এখন ভিন্ন এক ‘মিশন’। ক্যামেরুনের অন্যতম সমস্যা প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে রীতিমতো যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন মিলা।
আমাদের দেশের মতো মধ্য আফ্রিকার দেশ ক্যামরুনও প্লাস্টিক নিয়ে জেরবার। প্লাস্টিক বর্জ্য নদী-নালা-খাল-বিল আর রাস্তাঘাটে ছড়িয়ে দেশটির পরিবেশ দূষিত করে তুলেছে। ২০১৪ সালে ক্যামেরুন সরকার ক্ষতিকর প্লাস্টিক তৈরি, বিক্রি, বিতরণ আর আমদানি-নিষিদ্ধ করলেও তেমন লাভ হয়নি। এ মাসের শুরুর দিকে ক্যামেরুনের সবচেয়ে বড় শহর দুয়ালা থেকে প্রায় ১০০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য জব্দ করা হয়েছে।
দেশের এই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছেন মিলা। প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে ঘর-বাড়ি বানানোর উপকরণ তৈরি করার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন তিনি। বিশ্বকাপের বয়োজ্যেষ্ঠ গোলদাতার প্রকল্পটির নাম ‘দ্য হার্ট অব আফ্রিকা’। এই প্রকল্প নিয়ে দারুণ আশাবাদী ৬৩ বছর বয়সী মিলা, ‘আমরা দূষণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ আর তরুণ বেকারদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে এই প্রকল্প চালু করেছি।’
গত বছর আফ্রিকার বিংশ শতাব্দীর সেরা ফুটবলার নির্বাচিত মিলা সাড়াও পাচ্ছেন ভালোই। গত নভেম্বরে ‘দ্য হার্ট অব আফ্রিকা’ ক্যামেরুনের রাজধানী ইয়াউন্দের দুটো স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছে প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহের আহ্বান জানিয়েছিল। মাত্র এক সপ্তাহে শিক্ষার্থীরা তিন টন বর্জ্য সংগ্রহ করে জমা দিয়েছিল মিলার সংস্থাটির কাছে। সেই বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত করে সিমেন্টের মতো প্লাস্টিকের স্ল্যাব তৈরি করা হচ্ছে। টেকসই, অভঙ্গুর, পানিরোধী স্ল্যাবগুলো একটু-একটু করে জনপ্রিয়তাও পাচ্ছে মিলার দেশে।
মিলার পরিকল্পনাও বিশাল। নিজের প্রকল্পের জন্য অন্তত আড়াই হাজার তরুণকে নিয়ে একটি শক্তিশালী দল গড়ে তোলার লক্ষ্য আফ্রিকার দুবারের বর্ষসেরা ফুটবলারের। প্রকল্পটির নির্বাহী সচিব পংখাস ফিগ জানিয়েছেন, ‘প্রথমে আমরা ২৫ জন তরুণকে নির্বাচিত করে ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। ওই তরুণরা নিজেরাই প্রশিক্ষক হয়ে আরো অনেককে এই প্রকল্পে নিয়ে আসতে পারবে।’
গোল করে কর্নার ফ্ল্যাগের কাছে দৌড়ে গিয়ে মিলার কোমর দোলানো নাচের দৃশ্য আজও বহু ফুটবল-অনুরাগীর চোখে ভাসে। প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে কি আবার আনন্দে নেচে উঠতে পারবেন আফ্রিকার অন্যতম সেরা তারকা?