‘ফিনিশার’ শব্দটির জন্ম দিয়েছিলেন যিনি
‘ফিনিশার’ শব্দটা এখন প্রায়ই ব্যবহার হয় ক্রিকেটবিশ্বে। ব্যাট হাতে দলের জয়ে দারুণ অবদান রাখার জন্য অনেকের নামের আগেই জুড়ে দেওয়া হয় ফিনিশার শব্দটা। বাংলাদেশের মাহমুদউল্লাহ, নাসির হোসেনও পেয়েছেন এই ফিনিশার তকমা। কিন্তু ক্রিকেট ডিকশনারিতে এই শব্দটি যুক্ত করার পুরো কৃতিত্বটিই অস্ট্রেলিয়ার মাইকেল বেভানের। ১৯৭০ সালের আজকের এই দিনেই জন্ম হয়েছিল ওয়ানডে ক্রিকেটের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যানের।
শুধু পরিসংখ্যান দিয়ে বেভানের মাহাত্ম্য বিচার করতে গেলে বোকামিই হয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ রানশিকারিদের তালিকায় বেশ পেছনেই আছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। কিন্তু বেশির ভাগ সময় ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমে বেভান যেভাবে ব্যাটিং করতেন, তা স্মরণীয়ই হয়ে থাকবে ক্রিকেটবিশ্বে। তিনি যেন ছিলেন নির্ভরতার আরেক নাম। অস্ট্রেলিয়া অনেক ম্যাচেই স্মরণীয় জয় পেয়েছে বেভানের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে সওয়ার হয়ে। মিডল অর্ডারে তাঁর মতো ব্যাটসম্যান খুব কমই দেখেছে ক্রিকেটবিশ্ব। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বেভান খেলেছিলেন ৬৫ রানের দারুণ ইনিংস। বেভানের ব্যাটে ভর করেই অস্ট্রেলিয়া পেয়েছিল ২১৩ রানের পুঁজি। পরে সেই ম্যাচটি টাই হওয়ায় ফাইনালের টিকেট পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। শেষ পর্যন্ত জিতেছিল বিশ্বকাপ শিরোপাও। ১৯৯৬ সালের সেমিফাইনালেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বেভানের ৬৯ রানের ইনিংসটি স্মরণীয় হয়ে আছে ক্রিকেটবিশ্বে।
১৯৯৪ সালে অভিষেকের পর ২০০৪ সাল পর্যন্ত ১০ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে বেভান খেলেছেন ২৩২টি ওয়ানডে। ১৯৬ ইনিংসে ব্যাট করে ৫৩.৫৮ গড়ে সংগ্রহ করেছেন ৬,৯১২ রান। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে বেভানের ব্যাটিং গড়ই সবচেয়ে বেশি। আর টেস্টখেলুড়ে দলগুলোর ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ব্যাটিং গড়ের বিবেচনায় বেভানকে ছাড়িয়ে যেতে পেরেছেন শুধু দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স। ২০০টি ওয়ানডে খেলে ভিলিয়ার্সের ব্যাটিং গড় ৫৪.৫৬।
ওয়ানডে ক্রিকেটে দারুণ নৈপুণ্য দেখালেও অবাক করার মতো বিষয় হলো বেভানের টেস্ট ক্যারিয়ার খুব বেশি দীর্ঘ হয়নি। ১৯৯৪ সালে অভিষেকের পর বেভান নিজের শেষ টেস্টটি খেলেছিলেন ১৯৯৮ সালে। চার বছরে ১৮টি টেস্ট খেলে করতে পেরেছেন ৭৮৫ রান।