চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ড্র-তে আইসিসির ‘ফিক্সিং’
ক্রিকেটে ম্যাচ পাতানো বন্ধ করতে কত উদ্যোগই না নিচ্ছে আইসিসি। দুর্নীতিবিরোধী ইউনিট গঠন, খেলোয়াড়দের আচরণবিধি তৈরি করে দেওয়া, জড়িত খেলোয়াড়দের কঠোর শাস্তি দেওয়া। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ এই সংস্থাই কিন্তু ‘ফিক্সিং’য়ের আশ্রয় নিচ্ছে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য। আইসিসির বড় আসরগুলোতে বিজ্ঞাপন ও সম্প্রচার বাণিজ্যের কথা চিন্তা করেই যে বারবার ভারত ও পাকিস্তানকে এক গ্রুপে রাখা হয়, সেটা সম্প্রতি স্বীকারই করে নিয়েছেন আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন।
আইসিসির সর্বশেষ চারটি আসরের মতো ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ড্রয়ের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে একই চিত্র। একই গ্রুপে পড়েছে ভারত ও পাকিস্তান। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এ দুই দল বারবার কেন একই গ্রুপে জায়গা করে নেয়? এটা কি নিতান্তই কাকতালীয় ব্যাপার? না। আইসিসির ইচ্ছাতেই বারবার ঘটে কাণ্ডটা। বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে প্রধান নির্বাহী রিচার্ডসন বলেছেন, ‘এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে, আমরা ভারত ও পাকিস্তানকে একই গ্রুপে রাখার চেষ্টা করি। আইসিসির দৃষ্টিকোণ থেকে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পুরো বিশ্বেই এটা খুব বড় একটা ব্যাপার। আর ক্রিকেট সমর্থকরাও এটা প্রত্যাশা করে।’
ক্রিকেটবিশ্বে অন্য যেকোনো ম্যাচের চেয়ে বেশি উত্তেজনা তৈরি করে উপমহাদেশের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তানের লড়াই। বিজ্ঞাপনদাতা ও টেলিভিশন সম্প্রচারকারীদের জন্যও তাই বেশ আকর্ষণীয় পাকিস্তান-ভারত ক্রিকেটীয় লড়াই। বাণিজ্যিক এই ব্যাপারটি মাথায় রেখেই বারবার একই গ্রুপে রাখা হয় ভারত ও পাকিস্তানকে। এর আগে ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ, ২০১৪ ও ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও একই গ্রুপে দেখা গেছে ভারত ও পাকিস্তানকে।
নিয়ম অনুযায়ী লটারির মাধ্যমে নির্ধারিত হওয়ার কথা, গ্রুপ পর্বে কোন দল কোন গ্রুপে খেলবে। কিন্তু আইসিসি যে বেশ কয়েকটি আসরে ইচ্ছা করেই ভারত-পাকিস্তানকে এক গ্রুপে রেখেছে, তা এখন স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে। আইসিসির এই ‘ফিক্সিং’য়ের কারণে অন্য অনেক দলকেই পড়তে হচ্ছে কঠিন পরীক্ষার মধ্যে। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেই যেমন বাংলাদেশকে পড়তে হয়েছে কঠিন গ্রুপে। ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশকে খেলতে হবে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া, রানার্সআপ নিউজিল্যান্ড ও স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
তবে এভাবে গ্রুপ নির্ধারণ করা হলেও আইসিসি বা এই প্রতিযোগিতার সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই বলেই মনে করছেন রিচার্ডসন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা এটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করি যে, গ্রুপগুলো যেন র্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতেই হয়। প্রতিটি গ্রুপের র্যাঙ্কিং নম্বর যেন সমান থাকে। এটা অনেকভাবেই করা যায়। ফলে দুই গ্রুপের মধ্যে ভারসাম্য নিশ্চিত করা গেলে এই লড়াইটা (ভারত-পাকিস্তান) বাদ দেওয়াটাই বোকামি।’