এভাবে বসে থাকতে চান না তামিম

শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচটি কবে খেলেছেন, তা যেন ভুলতেই বসেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ২০১৫ সালে দারুণ সাফল্যের পর এ বছর অলস সময়ই কাটছে তামিম-মাশরাফিদের। গত ২৬ মার্চ তাঁরা সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচটি খেলেছিলেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। এর পর আবার সেই সুযোগ আসবে দীর্ঘ সাত মাসের বিরতিতে। অক্টোবরে বাংলাদেশ খেলবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। লম্বা একটা সময় এভাবে বসে থাকাটা অসহনীয়ই মনে হচ্ছে তামিম ইকবালের কাছে। দীর্ঘ সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে থাকার প্রভাব মাঠের পারফরম্যান্সেও পড়বে বলে আশঙ্কা বাংলাদেশের এই বাঁহাতি ওপেনারের।
গত মার্চে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশন শেষ হওয়ার পর থেকে আর কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছে না বাংলাদেশ। আগামী জুলাইয়ে ভারত সফরে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটা যে হচ্ছে না, তা নিশ্চিতই হয়ে গেছে। ফলে দীর্ঘ বিরতির পর আবার খেলার সুযোগ আসবে আগামী অক্টোবরে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টেস্ট সিরিজে। কিন্তু এভাবে লম্বা সময় ধরে না খেললে সেটা মাঠের পারফরম্যান্সের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন তামিম। ক্রিকেটের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘দারুণ একটা মৌসুম কাটানোর পর আমরা ছয় মাস ধরে খেলছি না। এটা অবশ্যই আমাদের ওপর প্রভাব ফেলবে। আমাদের বিপক্ষে খেলার জন্য সবারই আগ্রহী হওয়া উচিত। কিন্তু আমরা বসে আছি। আমরা জানি না যে ছয় মাস পর কীভাবে খেলতে পারব। জিম্বাবুয়ে ছাড়া এমন কোনো দল নেই, যারা এত লম্বা সময় বসে থাকে।’
২০১৫ সালে সত্যিই দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটের নজর কেড়েছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ওয়ানডে সিরিজে হারের স্বাদ দিয়েছিলেন পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দলগুলোকে। বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পৌঁছে গিয়েছিল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত। এ বছরের শুরুতে এশিয়া কাপেও শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনাল খেলেছিলেন মাশরাফিরা। এত এত সাফল্যের পরও অন্য দেশগুলো কেন বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে আগ্রহী হচ্ছে না, তা কিছুতেই ভেবে পাচ্ছেন না তামিম। তিনি বলেছেন, ‘ছয় মাস ধরে বসে থাকাটা কোনো কিছুরই ন্যায্যতা দিচ্ছে না। পাঁচ বছর আগে যেমন খেলতাম, এখনও তেমন খেললে তবু কিছু বোঝা যেত। তখন আমাদের ফলাফলটা ছিল অনুমানযোগ্য। কিন্তু এত ভালো নৈপুণ্য দেখানোর পরও তারা কেন আমাদের বিপক্ষে খেলতে চায় না, আমি জানি না।’
টেস্ট খেলুড়ে সব দলই কাটাচ্ছে ব্যস্ত সময়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ খেলেছে ত্রিদেশীয় সিরিজ। শ্রীলঙ্কা টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। পাকিস্তান গেছে ইংল্যান্ড সফরে। জিম্বাবুয়ে সফর শেষে ভারত এখন প্রস্তুতি নিচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের। আগামী জুলাই-আগস্টে নিউজিল্যান্ডও যাবে জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। সবারই কাটছে ব্যস্ত সময়। শুধু বাংলাদেশই পাচ্ছে না আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সুযোগ। এভাবে টানা ছয় মাস বসে থাকতে হলে সব দলের পারফরম্যান্সেই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মত দিয়েছেন তামিম, ‘যেকোনো শীর্ষ দলকে ছয় মাসের জন্য বসে থাকতে বলেন। আট মাস বসে থাকার পর তারা কেমন খেলছে, সেটা দেখতে পাবেন। আগে যেভাবে খেলত, তারা কোনোভাবেই আর সেভাবে খেলতে পারবে না।’