মানিক মিয়া এভিনিউতে ‘বিশ্বকাপ জয়ের’ আনন্দ

Looks like you've blocked notifications!
বিশ্বকাপে অসাধারণ সাফল্য পাওয়া মাশরাফিদের সংবর্ধনা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। শনিবার রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে। ছবি : সাইফুল সুমন

অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠায় দেশে ফিরে বাংলাদেশ দলের কয়েকজন ক্রিকেটার নিজ জেলায় সংবর্ধনা পেয়েছেন। শনিবার পুরো দলকে একসাথে সংবর্ধনা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বেলা আড়াইটায় রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে ব্যান্ডসংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে টাইগারদের নিয়ে মেতে উঠেছে ক্রিকেট অনুরাগীরা, যেন বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জয় করেই ফিরেছে।

বিকেল সাড়ে ৪টায় ক্রিকেটাররা দলের গাড়িতে করে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে একে একে মঞ্চে ওঠেন বিশ্বকাপের স্বপ্ন-সারথিরা। সবার আগে মঞ্চে ওঠেন পেসার আল আমিন। সবার শেষে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

মঞ্চে অধিনায়ক মাশরাফির হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও সাবেক অধিনায়কদের পক্ষ থেকে রকিবুল হাসান। এ ছাড়া বাংলাদেশ আম্পায়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন, বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন, র‍্যাব, পুলিশসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে মাশরাফিদের ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।

তবে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে থাকতে পারেননি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তিনি আইপিএল খেলতে ভারতে গেছেন। মঞ্চ থেকে তাঁর জন্য শুভকামনা জানানো হয়। অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনা করছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার আতহার আলী খান।

অনুষ্ঠানে প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেখানো হয় বিশ্বকাপে সাফল্যের চিত্রগুলো। রুবেলের সেই দুর্দান্ত বোলিং অ্যাকশন এবং মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি দুটি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখানো হয়েছে।

সংবর্ধনা পেয়ে দারুণ খুশি বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা দর্শকদের উদ্দেশে তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আপনারা সব সময় আমাদের সঙ্গে ছিলেন। দলের ভালো সময়েও ছিলেন, খারাপ সময়েও। আপনাদের এই সাপোর্ট, এই অনুপ্রেরণাকে পাথেয় করেই অনকে দূর এগিয়ে যাবে বাংলাদেশের ক্রিকেট।’

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল অাবদুল মুহিত শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, ‘ক্রিকেটারদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে আমার কী যে আনন্দ লাগছে, তা বলে বোঝানো যাবে না। বিশ্বকাপে তারা যে কৃতিত্ব দেখিয়েছে, পুরো জাতির সঙ্গে আমিও গর্বিত। ক্রিকেটারদের এই সাফল্য পুরো জাতির সাফল্য।’

 

ক্রিকটারদের অভিনন্দন জানিয়ে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি বলেন, ‘অভিনন্দন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে, যারা বিশ্বকাপে দেশকে এই সাফল্য এনে দিয়েছে। আমার পক্ষ থেকে এবং জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকেও ক্রিকেটারদের আন্তরিক শুভেচ্ছা রইল।’

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশ দলের সাফল্যে সবচেয়ে বেশি অবদান ক্রিকেটারদেরই। তারপরই পরই আমি বলব কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের কথা। তাদের সবার অবদানই বাংলাদেশ দল এই সাফল্য পেয়েছে। মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ অসাধারণ খেলেছেন। দুই তরুণ সৌম্য সরকার ও সাব্বির রহমান সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন বলেই দল এই সাফল্য এসেছে।’  

অনুষ্ঠানে সুরের মূর্ছনায় দর্শকদের মাতিয়েছে মাইলস, ওয়ারফেজ, অর্থহীনসহ কয়েকটি ব্যান্ড। সন্ধ্যায় আতশবাজির ঝলকানিতে শেষ হয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।

এর আগে সৌম্য সরকারকে সাতক্ষীরায়, মুশফিকুর রহিমকে বগুড়ায়, মাশরাফি বিন মুর্তজাকে নড়াইলে ও মাহমুদউল্লাহকে ময়মনসিংহে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল ক্রিকেটারদের। মালয়েশিয়ায় আইসিসি ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ক্রিকেটারদের নিয়ে ঢাকাসহ সারা দেশ মেতে উঠেছিল সেদিন। ছাদ খোলা গাড়িতে করে, পুষ্পবৃষ্টিতে ভিজে গোটা ঢাকা ঘুরেছিলেন ক্রিকেটাররা। লাখো জনতা হর্ষধ্বনি করে আকরাম-পাইলট-রফিক-বুলবুলদের অভিনন্দন জানিয়েছিল সেদিন।