অলিম্পিকে ‘ত্রয়ী’ বোনের গল্প

Looks like you've blocked notifications!
অলিম্পিকের ম্যারাথনে অংশ নিতে যাচ্ছেন এস্তোনিয়ার লিলা, লিনা ও লিলি লুইক। ছবি : রয়টার্স

তিনজনের চেহারা, চুল, চোখের মণি অবিকল এক রকম। এতটাই মিল যে তিনজনকে আলাদা করা মুশকিল। তাঁরা এস্তোনিয়ার ‘ট্রিপলেট’ বা ত্রয়ী বোন লিলা, লিনা আর লিলি লুইক। রিও অলিম্পিকে ম্যারাথনে অংশ নিয়ে যাঁরা ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন। আধুনিক অলিম্পিকের ১২০ বছরের ইতিহাসে আগে কখনো কোনো ‘ট্রিপলেট’কে দেখা যায়নি।

অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে ‘লুইক সিস্টার্স’ রোমাঞ্চিত। ফেসবুকে এরই মধ্যে ‘ট্রিও টু রিও’ নামে একটা পেজ খুলেছেন তাঁরা। বেশ ভালো সাড়াও পাচ্ছেন।

আজ ইতিহাসের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকলেও লিলা, লিনা আর লিলি লুইক দূরপাল্লার দৌড়ে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মাত্র ছয় বছর আগে।  তখন তাঁদের বয়স ২৪ বছর। লিলি জানিয়েছেন, ‘ছেলেবেলা থেকে অনেক কিছুতে আমাদের আগ্রহ ছিল। আমরা নাচতে ভালোবাসতাম, অন্য বেশ কিছু বিষয়েও আগ্রহী ছিলাম। এটাই আমাদের খেলাধুলার পেশাদার জগতে আসতে উৎসাহিত করেছে।’ অন্য দুই বোনকে ম্যারাথনে নিয়ে আসা লিনার মন্তব্য, ‘স্প্রিন্ট অনেক বেশি টেকনিক্যাল হওয়ায় দূর পাল্লার দৌড়ের প্রতি আমরা আগ্রহী হয়ে পড়ি।’

দৌড় শুরু করার বছর দুয়েক পর তাঁরা বুঝতে পারেন, বড় প্রতিযোগিতায় লড়াই করার সময় এসেছে। তখন থেকেই তিন বোনের লক্ষ্য ছিল অলিম্পিকে অংশগ্রহণ। সেসব দিনের স্মৃতি রোমন্থন করে লিলি জানাচ্ছেন, ‘এক বছর পরই আমরা দেখলাম এস্তোনিয়াতে আমাদের ফল ভালো হচ্ছে। আমরা ভাবলাম যে এস্তোনিয়ার বাইরে বড় বড় প্রতিযোগিতা যেমন ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ বা অলিম্পিকে আমরা ভালো করতে পারব।’

লড়াইয়ে নামার আগে তিন বোন একে অন্যকে মানসিকভাবে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেন। এমনকি একই প্রতিযোগিতায় অংশ নিলেও দৌড়ানোর কলাকৌশল নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করেন তিন বোন। তবে এত মিল থাকলেও এস্তোনিয়ায় কিন্তু আলাদাই থাকেন তিনজনে। শুধু মাঝেমধ্যে প্র্যাকটিস করেন একসঙ্গে। তবে শীতকালে অনুশীলনের জন্য একসঙ্গে কেনিয়াতে যেতে ভুল হয় না কখনো। লিলার মতে, ‘একা একা প্র্যাকটিস করা বিরক্তিকর।’

রিওতে পা রেখে সাড়া ফেলে দিলেও ‘লুইক সিস্টার্স’-এর কাছ থেকে পদক আশা না করাই ভালো। আফ্রিকানদের সঙ্গে তাঁদের পেরে ওঠা মুশকিলই হয়ে পড়বে। চার বছর আগে লন্ডনে দুই ঘণ্টা ২৩ মিনিট ৭ সেকেন্ডে অলিম্পিক রেকর্ড গড়ে স্বর্ণ জিতেছিলেন ইথিওপিয়ার টিকি জেলানা। রুপা ও ব্রোঞ্জজয়ীর টাইমিং ছিল দুই ঘণ্টা ২৩ মিনিট ১২ সেকেন্ড আর দুই ঘণ্টা ২৩ মিনিট ২৯ সেকেন্ড। অথচ তিন বোনের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা লিলার সেরা টাইমিং দুই ঘণ্টা ৩৭ মিনিট ১২ সেকেন্ড। লিনার আরো আড়াই মিনিট আর লিলির ৪৫ সেকেন্ড বেশি সময় লাগে ম্যারাথন শেষ করতে।

তবে পদক আসুক আর না আসুক, অলিম্পিকে অংশ নিতে পেরেই তিন বোন আনন্দে আত্মহারা। আগামী রোববার মেয়েদের ম্যারাথনের সময় ‘লুইক সিস্টার্স’-এর দিকে চোখ রাখতেই হবে ক্রীড়াপ্রেমীদের।