ভারতের বিশ্বকাপ খেলোয়াড় এখন ধানচাষি!

Looks like you've blocked notifications!
জীবনের সোনালি দিনগুলোর কথা মনে করে শুধু দীর্ঘশ্বাসই ফেলেন ভিনসেন্ট লাকরা। ছবি : সংগৃহীত

একসময় ছিলেন ভারতীয় হকি দলের অপরিহার্য খেলোয়াড়। অথচ ভাগ্যের ফেরে এখন তিনি ধানচাষি। অর্থের অভাবে সংসার চালানোই কঠিন হয়ে পড়েছে ভিনসেন্ট লাকরার জন্য।

লাকরার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে গৌরবময় মুহূর্তের জন্ম ১৯৭৮ বিশ্বকাপে। আর্জেন্টিনায় অনুষ্ঠিত ওই বিশ্বকাপে স্বাগতিকদের হারিয়ে পঞ্চম হয়েছিল ভারত। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লাকরা সম্পর্কে ভারতের সাবেক হকি তারকা বলবীর সিংয়ের অভিমত, ‘১৯৭৮ বিশ্বকাপে আমাদের দলের অন্যতম সেরা সেন্টার ফরোয়ার্ড ছিল লাকরা। তার ছিল অফুরন্ত এনার্জি। মাঠে সে কখনোই ক্লান্ত হতো না।’

অথচ সেই অদম্য হকি খেলোয়াড় এখন রণক্লান্ত, দারিদ্র্যের চাপে পিষ্ট। ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের প্রত্যন্ত গ্রাম ধরমজয়গড়ে ধান চাষ করে সংসার চালাতে হয় লাকরাকে। দীর্ঘ ১৪ বছর ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে হকিস্টিক হাতে দাপিয়ে বেড়ালেও ছত্তিশগড় রাজ্য সরকার থেকে অতি সামান্য সাহায্য পান তিনি। অথচ এই রাজ্যই অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিকের সফল খেলোয়াড়দের বিশাল অঙ্কের আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছে সম্প্রতি।

হকি মাঠে সাফল্যের সুবাদে বহু বিখ্যাত মানুষের সান্নিধ্যেই শুধু আসেননি, তাঁদের কারো কারো সঙ্গে বন্ধুত্বও হয়েছিল লাকরার। প্রখ্যাত অভিনেতা সুনীল দত্ত ছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বলিউডের প্রয়াত তারকাকে নিয়ে লাকরার স্মৃতিচারণ, ‘ক্রীড়াপ্রেমী সুনীল দত্তর সঙ্গে ছিল আমার গভীর বন্ধুত্ব। তখন আমার দারুণ সুসময়। তিনি আমাকে মুম্বাইয়ে থিতু হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু আমি তা করতে পারিনি। কারণ, পরিবারের সদস্যদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ধরমজয়গড়ে ফিরতে হয়েছিল আমাকে। সেই ১৯৮৪ সাল থেকে নিজের গ্রামেই আমি বাস করছি।’

সেদিন সুনীল দত্তর অনুরোধ রাখলে আজ হয়তো জীবনটাই অন্য রকম হতো লাকরার। অর্থের অভাবে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেখাতে না পারার আক্ষেপে ভুগতে হতো না। নিজের দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি, ‘রাজ্য সরকার থেকে মাত্র পাঁচ হাজার রুপি পেনশন পাই আমি। ১১ সদস্যের পরিবার চালানোর জন্য এটা একদমই যথেষ্ট নয়। এমনকি আমার মাথা গোঁজার বাসাটার অবস্থাও ভালো নয়।’