লিউ শিয়াংয়ের কান্নাভেজা বিদায়

Looks like you've blocked notifications!
বিদায়বেলায় মুখে হাত চেপে কান্না আটকানোর চেষ্টা করছেন চীনের অ্যাথলেটিকস তারকা লিউ শিয়াং। ছবি : এএফপি

ভক্তদের কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার সময় যে এভাবে ভেঙে পড়বেন, কে জানত! অ্যাথলেটিক ট্র্যাক থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন মাসখানেক আগে। রোববার রাতে নিজের শহর সাংহাইয়ে ভক্তদের ভালোবাসায় আপ্লুত লিউ শিয়াং আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়লেন। ২০০৪ অলিম্পিক থেকে চীনকে ১১০ মিটার হার্ডলসের স্বর্ণ উপহার দেওয়া অ্যাথলেটকে বিদায় জানাতে আসা অনেক ভক্তও চোখের জল আটকে রাখতে পারেননি।

সাংহাই স্টেডিয়াম শিয়াংয়ের হাতের তালুর মতোই চেনা। এখানে প্রশিক্ষণ নিয়েই নিজেকে গড়ে তুলেছেন তিল তিল করে, এগিয়ে গেছেন সাফল্যের পথে। ডায়মন্ড লিগ মিট শেষে সেই সাংহাই স্টেডিয়ামে অগুনতি ভক্তের কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার সময় তিনি বলেন, ‘আপনাদের উৎসাহ আর ভালোবাসায় আমি আপ্লুত। আপনাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। নিজেকে দারুণ সম্মানিত বোধ করছি। সবাইকে বিদায় বলার সুযোগ পাওয়ায় আমি আনন্দিত। আমি নিশ্চিত, আজ থেকে আমাদের দেশ আরো অনেক ভালো অ্যাথলেট পাবে।’ ট্র্যাকের পাশে দাঁড়িয়ে যখন কথাগুলো বলছিলেন, চোখে জল চিকচিক করছিল শিয়াংয়ের। ভক্তদের অনেকে তখন মুখে হাত চেপে কান্না আটকানোর চেষ্টায় ব্যস্ত।

চীনকে যেমন অনেক দিয়েছেন, তেমনি দেশের মানুষকে কম কাঁদাননি ৩১ বছর বয়সী শিয়াং। তাঁর ক্যারিয়ার যেন উত্থান আর পতনের এক অদ্ভুত মিশেলে গড়া। ২০০২ এশিয়ান গেমসে স্বর্ণ জিতলেও বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের পাদপ্রদীপের আলোয় উঠে আসেন দুই বছর পর, ২০০৪ এথেন্স অলিম্পিকে। প্রিয় ইভেন্ট ১১০ মিটার হার্ডলসে সাফল্য পেয়ে চীনকে ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড থেকে প্রথম অলিম্পিক শিরোপা উপহার দেন তিনি।

তিন বছর পর আবার চীনের মানুষের উল্লাস। ২০০৭ বিশ্ব অ্যাথলেটিকসে আবার স্বদেশকে সোনালি সাফল্যে ভাসিয়ে দেন সাংহাইয়ে জন্ম নেওয়া শিয়াং।

তার পরের বছর বেইজিং অলিম্পিক। অলিম্পিক উপলক্ষে পাখির বাসার আদলে তৈরি বিশাল বার্ড’স নেস্ট স্টেডিয়াম শিয়াংয়ের আরেকটি কীর্তির সাক্ষী হতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল। কিন্তু প্রথম হিটে দৌড়ানোর সময় চোটে আক্রান্ত হয়ে সারা দেশকে হতাশার সাগরে ডুবিয়ে দেন তিনি। একজন টিভি ভাষ্যকার তো ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙেই পড়েছিলেন।

২০১২ লন্ডন অলিম্পিক আবার হতাশা বয়ে আনে শিয়াংয়ের জীবনে। এবারও প্রথম হিটে দুর্ঘটনা। দৌড়ের শুরুতেই প্রথম হার্ডলের ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর আরেকটি অলিম্পিক জয়ের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়। অবশ্য পড়ে যাওয়ার পর থেমে থাকেননি, এক পায়ে লাফিয়ে লাফিয়েই দৌড় শেষ করেছিলেন। বলা বাহুল্য, সবার শেষে! ট্র্যাক থেকে বেরিয়ে আসার সময় শেষ হার্ডলে তাঁর চুমুর দৃশ্য আবেগাক্রান্ত করে তোলে গ্যালারির দর্শককে।

লন্ডন অলিম্পিকের পর আর কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নেননি লিউ শিয়াং।