গার্দিওলা না ইনজাগি, কার হাতে ট্রেবল?

Looks like you've blocked notifications!
পেপ গার্দিওলা ও সিমোনে ইনজাগি। ছবি : এএফপি

ফুটবলটা মাঠের খেলা। ৯০ মিনিটে একটি দলের ১১ জন প্রাণপণে চেষ্টা করেন ফল বের করতে। মাঠে নিজ-নিজ পজিশন থেকে গড়ে তোলেন প্রতিরোধ-আক্রমণ। দলীয় আক্রমণ ও প্রতিরোধ মজবুত রাখতে কখনও কখনও তারা বদলে নেন পজিশন। কেউ কেউ হন বদলি। নামেন নতুন খেলোয়াড়। এসবই হয় মাঠের বাইরে থাকা একজনের ইশারায়। তিনি কোচ। ডাগআউটে দাঁড়িয়ে পার্থক্য গড়ে দেওয়ার পথটা খুলে দেন তিনি।

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে বাংলাদেশ সময় আজ শনিবার (১০ জুন) দিনগত রাত একটায় মাঠে নামবে ম্যানচেস্টার সিটি ও ইন্টার মিলান। মাঠের ফুটবলে ধারেভারে এগিয়ে ম্যানসিটি। কিন্তু, ডাগআউটের লড়াইটা ভিন্ন। সেখানে সিটি কোচ পেপ গার্দিওলাকে খুব বেশি এগিয়ে রাখা যাবে না ইন্টার কোচ সিমোনে ইনজাগির চেয়ে।

ইউরোপিয়ান ফুটবলে কোচিং ক্যারিয়ারে যেখানেই গেছেন, সোনা ফলিয়েছেন গার্দিওলা। বার্সেলোনা থেকে বায়ার্ন মিউনিখ হয়ে বর্তমানে সিটি, ক্যারিয়ারে সম্ভাব্য সবই জিতেছেন গার্দিওলা।

সিটির হয়ে চলতি মৌসুমে ইতোমধ্যে ‘ডবল’ জিতেছেন। প্রিমিয়ার লিগ ও এফএ কাপ জিতে দাঁড়িয়ে আছেন ট্রেবলের দ্বারপ্রান্তে। ১৯৯৯ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পর দ্বিতীয় ইংলিশ ক্লাব হিসেবে সিটিকে ট্রেবল জেতানো থেকে ৯০ মিনিটি দূরে তিনি। ২০২১ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে উঠেও চেলসির কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় সিটির।

সিমোনে ইনজাগিকে ইতালিয়ান ফুটবলে ডাকা হয় ‘কাপের রাজা’ নামে। চলতি মৌসুমে ইন্টারকে ‘ডবল’ জিতিয়েছেন তিনিও। কোপা ইতালিয়া ও ইতালিয়ান সুপার কাপের শিরোপা ঘরে তুলে ইনজাগিও ট্রেবল থেকে ঠিক ৯০ মিনিট দুরত্বে। ২০২১ সালে ক্লাবটিতে যোগ দেওয়ার পর গত মৌসুমেও এই দুটো শিরোপা জিতিয়েছিলেন ইন্টারকে। তার হাত ধরেই ১৩ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ইন্টার। নগর প্রতিদ্বন্দ্বী এসি মিলানকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে তারা।

আজকের ফাইনালে নিরঙ্কুশ ফেভারিট সিটি। গার্দিওলার দুর্দান্ত আক্রমণাত্মক রণকৌশলে সেমিফাইনালে গতবারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে ফাইনালে এসেছে তারা। যদি পেছন ফিরে তাকাই, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠার পথে একটি ম্যাচেও হারেনি সিটি। ৭ জয় ও ৫ ড্র নিয়ে ফাইনালে উঠল তারা। প্রতিপক্ষকে চুরমার করে দিয়েছে প্রায় প্রতি ম্যাচেই।

ম্যাচ সম্পর্কে বিটি স্পোর্টসকে গার্দিওলা বলেন, ‘ফাইনালের একটা চাপ আছে। ২০২১ এর পর আমরা আবার ফাইনালের মঞ্চে। এই ম্যাচটা খুবই চ্যালেঞ্জিং। সেরাটাই দেওয়ার চেষ্টা থাকবে আমাদের।’

ইন্টারের শুরুটা পুরোপুরি বিপরীত। প্রথম ম্যাচেই বায়ার্নের কাছে হার দিয়ে শুরু করে আসর। সেখান থেকে ইনজাগি ফাইনালে তুলেছেন দলকে। সে যাত্রায় হারিয়েছেন বার্সেলোনা, এসি মিলানের মতো দলগুলোকে। ইনজাগির কৌশলের প্রায় পুরোটাজুড়ে মধ্যমাঠ আর চিরাচরিত ইতালিয়ান রক্ষণ।

সিটিকে সমীহ করে স্কাই স্পোর্টসকে ইনজাগি বলেন, ‘সম্ভবত ম্যানসিটি এখন বিশ্বের সেরা দল। আমরা জানি কীভাবে খেলতে হবে। আমরা আমাদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এই যাত্রা নিয়ে গর্বিত। কোনো ভুল না করে ফাইনালে সেরাটাই দেওয়ার চেষ্টা থাকবে।’

মাঠের বাইরে লড়াইটা তাই সেয়ানে সেয়ানে হবে। যার মস্তিষ্ক আজ যত ক্ষুরধার হবে, মাঠের ফুটবলটা ততই সহজ হবে ১১ জনের জন্য। একটি মাত্র ম্যাচ, একটি মাত্র কৌশল বদলে দিতে পারে খেলার পুরো চিত্রই।