চট্টগ্রামের বিদায়, কোয়ালিফায়ারে তামিমের বরিশাল
লক্ষ্যটা খুব ছোট। জয়ের জন্য দরকার স্রেফ ১৩৬ রান। এই রান তাড়ায় শেরেবাংলায় তাণ্ডব চালায় ফরচুন বরিশাল। কাইল মায়ার্সের এক ওভারে চার-ছক্কার বৃষ্টির পর শুরুর পাঁচ ওভারেই স্কোরবোর্ডে বরিশাল তোলে ৬৬ রান। এমন ঝড়ো ব্যাটিংয়ে জয় পেতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি তামিমদের। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে বিদায় করে হেসেখেলে চলতি বিপিএলের কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত করেছে ফরচুন বরিশাল।
বিপিএলের এলিমিনিটর ম্যাচে চট্টগ্রামের বিপক্ষে সাত উইকেটে জিতেছে বরিশাল। চট্টগ্রামের দেওয়া ছোট লক্ষ্য ৩১ বল হাতে রেখেই পার করে ফেলে তামিম ইকবালের দল।
এই হারের মধ্যে দিয়ে শেষ হলো চট্টগ্রামের বিপিএল মিশন। বরিশালের পরের মিশন কোয়ালিফায়ার। আজ সোমবার প্রথম কোয়ালিফায়ারের লড়বে রংপুর রাইডার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ওই ম্যাচের জয়ী দল সরাসরি যাবে ফাইনালে। পরাজিত দলের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে লড়বে বরিশাল। সেই ম্যাচে নির্ধারণ হবে দ্বিতীয় ফাইনালিস্ট।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ রান তাড়ায় শুরুতে অবশ্য ধাক্কা খায় বরিশাল। প্রথম ওভারেই হারায় সৌম্য সরকারকে। সেই ধাক্কা দারুণভাবে সামাল দেন তামিম ও মায়ার্স। এই জুটিতেই মূলত জয়ের গল্প লিখে ফেলে বরিশাল।
দুজন মিলে রীতিমতো ঝড় তোলেন শেরেবাংলায়। চট্টগ্রাম অধিনায়কের এক ওভারে—৬,৪,৬,৪,৬ মেরে ২৬ রান তোলেন মায়ার্স। আক্রমণাত্মক ছিলেন তামিমও। জমে ওঠা এই জুটি দশম ওভারে ভাঙেন বেলাল খান। হাফসেঞ্চুরি ছোঁয়ার পর বিদায় করেন মায়ার্সকে। ২৬ রানে ৫০ করে বিদায় নেন মায়ার্স।
তবে ততক্ষণে খুব দেরি হয়ে যায় চট্টগ্রামের। কারণ জয়ের পথ সহজ করেই সাজঘরে ফিরেছেন মায়ার্স। তিনি ফিরলে চারে নামেন ডেবিড মিলার। তিনিও সাজঘরে ফেরেন ১৭ রানে। তবে, থিতু ছিলেন তামিম। ম্যাচ শেষ করেই মাঠ ছাড়েন বরিশালের অধিনায়ক। দলকে জেতানোর পথে ৪৩ বলে ৫২ রান করেন তিনি। যা সাজানো ছিল ৯টি চার দিয়ে।
এর আগে ম্যাচটিতে টস জিতে বোলিং বেছে নেন ফরচুন বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবাল। অধিনায়কের সিদ্ধান্ত যে সঠিক তার প্রমাণ মেলে শুরুতেই। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ছন্দে থাকা তানজিদ হাসান তামিমকে মাঠছাড়া করেন সাইফউদ্দিন। উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরা তানজিদ দুই রানের বেশি করতে পারেননি।
পরের শিকারটি ম্যাকয়ের হাত ধরে। পঞ্চম ওভারে ম্যাকয়ের পরপর দুই বলই উপরে তুলে মারেন চট্টগ্রামের দুই ব্যাটার জস ব্রাউন ও ইমরানুজ্জামান। প্রথম ক্যাচটি তুলে দেন ব্রাউন। সেই ক্যাচটি নিতে গিয়ে অবিশ্বাস্যভাবে ফেলে দেন তামিম।
পরের বলে একই কাজ করেন স্ট্রাইকে আসা ইমরানুজ্জামান। এবার সুযোগ আসে মায়ার্সের কাছে। তিনি সুযোগ হাতছাড়া করেননি। সুযোগ লুফে নিয়ে বিদায় করেন ইমরানুজ্জামানকে (৭)।
প্রথম যাত্রায় জীবন পাওয়া ব্রাউনকে নিজের শিকার বানান ম্যাকয়ই। সপ্তম ওভারে এসে মিলারের হাতে ব্রাউনকে ক্যাচ বানিয়ে বিদায় করেন তিনি। ২২ বলে ৩৪ রানের বেশি করতে পারেননি ব্রাউন। মাঝে নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে সৈকত আলিকে মাঠছাড়া করেন তাইজুল ইসলাম। পরের শিকারটি মায়ার্সের। নিজের শেষ ওভারে এসে চট্টগ্রাম অধিনায়ক শুভাগত হোমের স্টাম্প ভাঙেন মায়ার্স। ৪ বাউন্ডারিতে ১৬ বলে ২৪ রান করেন শুভাগত।
একের পর এক উইকেট হারানোর মিছিলে বড় লক্ষ্যের কাছে যেতে পারেনি চট্টগ্রাম। শেষের দিকে রোমারিও শেফার্ডের ১১ রান আর টেলঅ্যান্ডারদের ছোট ছোট ইনিংসে কোনো মতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৩৫ রানের পুঁজি পায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
ফরচুন বরিশালের হয়ে বল হাতে ২৮ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ম্যাকয়ের শিকার ২৯ রান দিয়ে দুটি। ২৮ রানে কাইল মায়ার্সের জুড়িতে শিকার দুটি।