বিশ্বকাপে জায়গা পাবেন তো লিটন?
বর্তমান বাংলাদেশ দলে শুদ্ধতম ব্যাটার কে, এমন প্রশ্নের জবাবে লিটন দাসের নামও আসবে নিশ্চিত! ক্রিকেটের ব্যাকরণ বোঝেন, হাতে শট আছে, খেলতে পারেন পরিস্থিতি বুঝে—লিটনকে নিয়ে সবার আকাঙ্খা তাই অনেক বেশি। অথচ, তিনি হতাশ করেই যাচ্ছেন ক্রমাগত। এমন এক সময়ে, যখন দরজায় কড়া নাড়ছে বিশ্বকাপ। এমন দলের বিপক্ষে, যে জিম্বাবুয়ে সুযোগ পায়নি বিশ্বকাপে।
চীনের সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান ও বিপ্লবী নেতা মাও সে তুংয়ের বিখ্যাত একটি কথা আছে। “হাজারটা পারমানবিক বোমা বিস্ফোরিত হতে দাও। অন্যদিকে, হাজারটা ফুলও তো ফুটছে।” আত্মবিশ্বাসী হতে কথাগুলো যথেষ্ট। লিটনকে অতদূর যেতে হবে না। ক্রিকেট আর বিপ্লবে ফারাক প্রচুর। মাঠের ক্রিকেটের অবশ্য বিদ্রোহ আছে। বাংলাদেশি ওপেনারের বিদ্রোহটা নিজের সঙ্গে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচে লিটনের সংগ্রহ যথাক্রমে ১, ২৩ ও ১২। সর্বশেষ ম্যাচে আজ মঙ্গলবার (৭ মে) যেভাবে আউট হয়েছেন ব্লেসিং মুজারাবানির বলে, তাতে নিজেই বিরক্ত। হাফ-ভলি ডেলিভারিতে বোল্ড হওয়া তার মতো একজন অভিজ্ঞ ব্যাটারের কাছ থেকে কেউ আশা করে না। ঘরের মাঠে যদি এই হয় অবস্থা, বিশ্বকাপে কেমন করবেন তিনি? তার চেয়ে বড় প্রশ্ন, আদৌ দলে সুযোগ মিলবে তো লিটনের?
ঠিক এখানটায় নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতে পারেন লিটন। ব্যাটিং কোচ থেকে শুরু করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন অবধি তার পাশে আছেন। সবার প্রত্যাশা, তিনি ফিরবেন। তার যে সেই সামর্থ্য ঢের আছে!
বিসিবি সভাপতি যেমন বলেছেন, ‘লিটনকে আমরা সবসময়ই প্রতিভাবান হিসেবে জানি। অনেকদিন ধরে সে ছন্দে নেই। জালাল ভাইয়ের (জালাল ইউনুস) সঙ্গে কথা হয়েছে। আমাদের যিনি ব্যাটিং কোচ তাকে বলা হয়েছে লিটনের ওপর একটু বিশেষ নজর দিতে, সমস্যাটা কোথায় বের করতে। আশা করা ছাড়া তো কিছু বলার নেই।’
এদিকে লিটনকে নিয়ে দলের ব্যাটিং কোচ ডেভিড হেম্প বলেন, ‘এটি ঠিক যে, লিটন রান পাচ্ছে না। তবে, সে কঠোর পরিশ্রম করছে। বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। খেলোয়াড়দের জীবনে উত্থান-পতন আসবেই। লিটনের এখন সেই সময়টা যাচ্ছে। সে এখন অতটা ধারাবাহিকভাবে খেলছে না। তার পরিশ্রম থেমে নেই। আশা করি, শিগগিরই সে কাঙ্ক্ষিত ছন্দে ফিরবে।’
তাকে নিয়ে ভরসার পারদ অনেক উঁচুতে। বারবার প্রমাণ করেছেন নিজেকে। ছন্দহীনতায় থেকে ছন্দে ফিরেছেন। দ্বিধা দূর করে নিজেকে চিনিয়েছেন। নামটি লিটন বলেই চাওয়া-পাওয়ার বেশি। আর যাকে নিয়ে প্রত্যাশা থাকে, হতাশার বলয় তাকেই বেশি ঘিরে ধরে। সেই বলয় ভেঙে চেনা রূপে ফিরবেন লিটন বিশ্বকাপের আগে, এই আশাতেই দিনগোনা। নয়তো ভাবতে হবে বিকল্প।