দুর্দান্ত জয়ে ইউরোয় জার্মানির দুরন্ত সূচনা
কাজ যা করার প্রথমার্ধেই করে রাখে জার্মানি। দ্বিতীয়ার্ধে তা কতটা উন্নত করা যায়, সেদিকে নজর দেয় দলটি। স্কটল্যান্ডকে নাকানি-চুবানি খাইয়ে একের পর এক আক্রমণ শানালেও গোল আসেনি সেভাবে। তাতে অবশ্য জয় পেতে অসুবিধা হয়নি জার্মানির। উয়েফা ইউরো ২০২৪ এর উদ্বোধনী ম্যাচে আজ শনিবার (১৫ জুন) স্কটল্যান্ডকে ৫-১ গোলে হারিয়ে আসরে দুরন্ত সূচনা করেছে তারা।
তিন গোলের লিড নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামে জার্মানি। এক দিকে বড় লিড, অন্যদিকে স্কটল্যান্ডের ১০ জনের দল। সুযোগ ভালোভাবেই লুফে নেন টনি ক্রুস-রুডিগাররা। তবে, একের পর এক দারুণ আক্রমণ তৈরি করেও গোল পাওয়া হচ্ছিল না তাদের। আক্ষেপ ঘোচান নিকোলাস ফুলক্রুগ। ৬৩ মিনিটে বদলি হিসেবে নেমে ৬৮ মিনিটেই স্কোরশিটে নাম লেখান এই ফরোয়ার্ড। জার্মানির লিড দাঁড়ায় ৪-০ তে। ৭৫ মিনিটে পঞ্চম গোল পেয়েছিল জার্মানি। দ্বিতীয়বার লক্ষ্যভেদ করেন ফুলক্রুগ। রেফারি সেটি বাতিল করেন অফসাইডের কারণে।
গোটা ম্যাচে জার্মানদের আক্রমণ সামলানো স্কটল্যান্ড ম্যাচে উদযাপনের উপলক্ষ পায় একবার। ৮৭ মিনিটে প্রায় মাঝমাঠ থেকে নেওয়া ফি-কিক শট ঠেকাতে গিয়ে আত্মঘাতী গোল করেন রুডিগার। ভিড়ের মাঝে তার মাথা ছুঁয়ে জার্মানির জালেই বল জড়ায়। যদিও সেখানে রুডিগারের করার কিছুই ছিল না। সতীর্থের দুঃখ দূর করেন এমরি চান। ৯৩ মিনিটে ম্যাচের শেষ আক্রমণ সাজায় জার্মানি। স্কটিশ ডি-বক্সের কাছে ছোট ছোট পাসে রচনা করে গোলের উৎস। যাতে শেষ প্রলেপ দেন চান। তার গোলের পর রেফারিও শেষ বাঁশি বাজান।
এর আগে ঘরের মাঠে রেফারির বাঁশি বাজার মাত্র ৫৩ সেকেন্ডের মাথায় আক্রমণ শানিয়ে বসে জার্মানি। তখনও অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনার দর্শকরা নড়েচড়েও বসেনি বোধহয়! নিজেদের রক্ষণভাগ থেকে লম্বা ক্রস করেন অ্যান্তোনিও রুডিগার। প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ডের রক্ষণভাগে বল পান জার্মান উইঙ্গার ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টজ। বুক দিয়ে বল রিসিভ করেন, বাম পায়ে শটও নিয়েছিলেন গোলমুখে। সেটি রুখে দেন স্কটিশ গোলরক্ষক অ্যাঙ্গুস গান।
প্রথম সুযোগ হারানো জার্মানি গোল পেতে বেশিক্ষণ সময় নেয়নি। ম্যাচের বয়স তখন ১০ মিনিট। মাঝমাঠ থেকে টনি ক্রুসের মাপা শট খুঁজে নেয় জসুয়া কিমিচকে। ডানপ্রান্ত থেকে দারুণ এক বল বাড়ান ভিয়ার্টজের কাছে, সেখান থেকে ওয়ান শটে জাল খুঁজে নেন ভিয়ার্টজ। এগিয়ে যাওয়া জার্মানরা বাড়িয়ে দেয় আক্রমণের গতি। যাতে দিশেহারা হয়ে পড়ে স্কটিশরা। ১৯ মিনিটে আবারও স্কটল্যান্ডের রক্ষণে হানা। ডি বক্সের ভেতর কাই হাভার্টজের বাড়ানো বল থেকে গোল করেন জামাল মুসিয়ালা।
দুই গোলের লিড আরও আগ্রাসী করে তোলে হুলিয়ান নাগেলসম্যানের শিষ্যদের। গোছানো ও গতিশীল ফুটবলে স্কটল্যান্ডকে কোনো সুযোগই দেয়নি জার্মানি। ২৩ মিনিটে ছন্দময় আরেকটি আক্রমণ আলোর মুখ দেখেনি হাভার্টজ ফাউলের শিকার হওয়াতে। নিজেদের ডি বক্সের একটু বাইরে তিন স্কটিশ ডিফেন্ডার মিলে থামান হাভার্টজকে।
ম্যাচের ৪১ মিনিটে চমৎকার সুযোগ পায় জার্মানি। কিমিচের ক্রস থেকে হেড করেন অধিনায়ক ইকাই গুন্দোগান। সেটি দুর্দান্ত এক ডাইভে বাঁচান স্কটিশ গোলরক্ষক। ফিরতি বলে ক্রুস শট নিলে সেটি প্রতিহত হয় রক্ষণ দেয়ালে। কিন্তু, এ সময় ডি বক্সে ফাউলের শিকার হন গুন্দোগান। লাল কার্ড দেখেন স্কটিশ ফুটবলার পর্টিয়াস। পেনাল্টি পায় জার্মানি। সেখান থেকে লক্ষ্যভেদ করতে ভুল করেননি হাভার্টজ। ৪৫ মিনিটে স্পটকিক থেকে পাওয়া গোলে ৩-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় জার্মানি।