হংকংকে হারিয়ে এশিয়া কাপে বাংলাদেশের শুভ সূচনা

ম্যাচের আগের দিন লিটন দাস জানিয়েছিলেন— তার দল আগ্রাসী নয়, স্মার্ট ক্রিকেট খেলতে চান। কথা রেখেছেন লিটন। কথা রাখার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। হংকংয়ের বিপক্ষে এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয়ের নায়ক লিটনই। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) হংকংকে বাংলাদেশ হারিয়েছে ৭ উইকেটে।
আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামে হংকং। ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪৩ রান তোলে দলটি। জবাবে ১৭.৪ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ করে ১৪৪ রান।
লক্ষ্যটা খুব বড় ছিল না। ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন শুরুটা করেন টি-টোয়েন্টির ঢংয়েই। দলীয় ২৪ রানে আউট হওয়ার আগে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৪ বলে ১৯ করেন ইমন। বাবর হায়াতের ক্যাচ বানিয়ে তাকে ফেরান আয়ুশ শুক্লা। আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম অবশ্য এদিন স্বভাবসুলভ ছিলেন না। আতিক ইকবালের বলে নিকাজাত খানের ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে মাত্র একটি চারে ১৮ বলে ১৪ রান করেন। ৪৭ রানে দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপরই তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে শুরু হয় লিটনের পথচলা। লক্ষ্যের দিকে একটু একটু করে এগোতে থাকেন দুজন। দেখেশুনে খেলেন হংকং বোলারদের। কোনো ঝুঁকি নেননি তারা। তৃতীয় উইকেট জুটিতে আসে ৯৫ রান। জয় থেকে দুই রান দূরে থাকতে সাজঘরে ফিরে যান লিটন।
ইকবালের বলে বোল্ড হওয়ার আগে বাংলাদেশ অধিনায়ক তুলে নেন অর্ধশতক। ৩৯ বলে ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৯ রান করেন লিটন। ৩৬ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন হৃদয়।
হংকংয়ের পক্ষে ইকবাল দুটি এবং শুক্লা নেন একটি উইকেট।
সন্ধ্যায় বল হাতে বাংলাদেশি বোলাররা সাফল্যের বার্তাই দিয়েছেন শুরুতে। দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে লিটনের ক্যাচ বানিয়ে হংকং ওপেনার আন্সি রথকে ফেরান তিনি। ফেরার আগে ৪ বলে ৫ রান করেন তিনি। ৭ রানে প্রথম উইকেট হারায় হংকং।
ওয়ানডাউনে নেমে হাত খুলে খেলতে শুরু করেন ২০১৪ সালে হংকংয়ের জয়ের নায়ক বাবর হায়াত। পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে তানজিম সাকিবকে উড়িয়ে মেরেছিলেন তিনি। পরের বলে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে তাকে বোল্ড করে সাজঘরের পথ দেখান সাকিব। ১২ বলে ১৪ রান করে ফেরেন তিনি। ৩০ রানে ২ উইকেট হারানোর পর ঘুরে দাঁড়ায় হংকং। তৃতীয় উইকেটে ৪১ রানের জুটি গড়ে বিপর্যয় সামাল দেন জিসান আলী ও নিজাকাত খান। সাকিবের বলে মুস্তাফিজুর রহমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জিসান, করেন ৩০ রান।
এক প্রান্তে নিজাকাত খেলেন নিজের মতো। অধিনায়ক ইয়াসিম মুর্তজাকে নিয়ে বাড়ান রানের গতি। ১৯ বলে ২৮ রানের গতিশীল ইনিংস খেলে রান আউট হন মুর্তজা। ৪২ রান করে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা নিজাকাতকে সাকিবের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান রিশাদ হোসেন। পরের বলে কিঞ্চিত শাহকে লেগবিফোর করেন রিশাদ। শেষ পর্যন্ত হংকং থামে মাঝারি সংগ্রহে।
বাংলাদেশের পক্ষে তাসকিন, রিশাদ ও সাকিব নেন দুটি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
হংকং : ২০ ওভারে ১৪৩/৭ (জিসান ৩০, আন্সি ৪, বাবর ১৪, ইয়াসিম ২৮, নিজাকাত ৪২, কিঞ্চিৎ ০, এজাজ ৫, কালহান ৪*, ইহসান ২* ; মেহেদি ৪-০-২৮-০, তাসকিন ৪-০-৩৮-২, তানজিম ৪-১-২১-২, মুস্তাফিজ ৪-০-২৩-০, রিশাদ ৪-০-৩১-২)
বাংলাদেশ : ১৭.৪ ওভারে ১৪৪/৩ (ইমন ১৯, তামিম ১৪, লিটন ৫৯, হৃদয় ৩৫*, জাকের ১* ; আয়ুশ ৩-০-৩২-১, আতিক ৩.৪-০-১৪-২, ইহসান ৩-০-২৮-০, ইয়াসিম ৪-০-৩৯-০, এজাজ ৩-০-১৪-০, কিঞ্চিৎ ১-০-১১-০)।
ফলাফল : বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী