ছুটির দিনে

নেই হিংস্র প্রাণীর ভয়, করে আসুন করমজল জয়

Looks like you've blocked notifications!

সুন্দরবন ভ্রমণের ইচ্ছে অনেকের মাথায় থাকলেও ঘুরতে যাওয়া হয় না নানা কারণে। পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের ভয়, সুন্দরবনে ঘুরতে গেলে যদি বাঘে ধরে; কিংবা সাপ-বিচ্ছু অথবা হিংস্র প্রাণী যদি কোনো ক্ষতি করে! তাদের জন্য ভয়হীন সুন্দরবন ভ্রমণের অনুষঙ্গ হতে পারে করমজল।

সুন্দরবনের পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের আওতাধীন করমজল সুন্দরবনেরই একটি অংশ। পশুর নদের তীরের এ পর্যটন কেন্দ্রটি ভ্রমণকারীর কাছে এখন আকর্ষণীয় স্থান। খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার বানিশান্তা ইউনিয়নসংলগ্ন বন-বনানী বিধৃত দ্বীপাঞ্চল করমজল।

যেকোনো পর্যটকের মন ভরে দেবে করমজল। এখানে দেখা যাবে হরিণ, কচ্ছপ, বানর, কুমির। ঠিক চিড়িয়াখানার মতো খাঁচাঘেরা খোলা জায়গায় ছোট-বড় অনেক হরিণ দেখা যাবে। এ ছাড়া উন্মুক্ত প্রাণী হিসেবে চোখে পড়ে নানা প্রজাতির পাখি, কাঠবিড়ালিসহ নানা প্রাণী। চোখে পড়ে শত শত মৌচাক।

বাংলাদেশ সরকার পরিচালিত দেশের একমাত্র লবণপানির কুমির ও বিলুপ্ত প্রজাতির কচ্ছপ (বাটাগুড় বাল্কা) প্রজননকেন্দ্র রয়েছে করমজলে। এখানে রয়েছে রোমিও, জুলিয়েট ও পিলপিল নামে তিনটি বড় কুমির। ছোট ছোট চৌবাচ্চায় ২৫০-৩০০টি বিভিন্ন বয়স ও আকারের কুমিরের বাচ্চা রয়েছে। দুই মিটার দৈর্ঘ্য হলে কুমিরের বাচ্চাগুলোকে নদীতে অবমুক্ত করা হয়।

করমজলে পর্যটকেরা পূর্বানুমতি ছাড়াই যেকোনো সময় প্রবেশ করতে পারবেন। করমজলে ঢুকলেই প্রথমে চোখে পড়বে মাটিতে শোয়ানো সুন্দরবনের একটি মানচিত্র।

প্রাকৃতিক পরিবেশে নিরাপদে সুন্দরবনের অভ্যন্তরীণ চিত্র অবলোকনের জন্য এখানে রয়েছে দেড় কিলোমিটার কাঠের ট্রেইল, যার নাম মাঙ্কি ট্রেইল। ট্রেইলজুড়ে দেখা মিলবে সুন্দরবনের অন্যতম বাসিন্দা রেসাস বানরের। বাদাম, কলা, বিস্কুট বা অন্য কোনো খাবার হাতে নিয়ে বানরগুলোকে লোভ দেখালেই ওরা ছুটে এসে হাত থেকে এসব খাবার লুফে নেবে। ওপর থেকে সমগ্র বনচিত্র দেখার জন্য ৪৫ ফুট উঁচু একটি টাওয়ার নির্মাণ করা রয়েছে।

যাতায়াত

ঢাকার সায়েদাবাদ ও গাবতলী থেকে বাগেরহাট রুটের বাসে যেতে পারেন মোংলা পর্যন্ত। মোংলা বন্দর থেকে মাত্র আট কিলোমিটার দূরে এ পর্যটন কেন্দ্রটির অবস্থান। মোংলা বন্দর থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করমজলে পৌঁছাতে সময় দরকার মাত্র দেড় ঘণ্টা। এ ছাড়া প্রথমে খুলনা এসে পরে নদীপথেও করমজল যেতে পারেন। নদীপথে খুলনা থেকে করমজলের দূরত্ব প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। আর খুলনার দাকোপ উপজেলা সদর থেকে ৩০ কিলোমিটার। মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, রূপসা থেকেও করমজল যাওয়া যায়।

রাত্রিযাপন করার জন্য খুলনা ও মোংলায় রয়েছে অনেকগুলো হোটেল। এ ছাড়া করমজলের আশপাশের ট্যুরিস্ট পয়েন্টগুলোতে রয়েছে কিছু রেস্টহাউস। প্রকৃতির এই লীলাভূমি খুব সহজ ও স্বল্প খরচেই ভ্রমণ করা যায়।

সাবধানতা

স্থানীয় কর্মী ছাড়া বনের গহিনে না যাওয়াই ভালো। এ ছাড়া যে পুকুরে কুমিরের বসবাস, সেখান থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করাই বুদ্ধিমানের কাজ।