ছুটির দিনে
চায়ের স্বাদ নিতে নীলকণ্ঠ টি-কেবিনে

মানুষ যখন কর্মপরিসরে ক্লান্তি বোধ করে, তখন শরীরের সতেজতা ফিরিয়ে আনতে মন্ত্রের মতো কাজ করে এক কাপ গরম চা। আর সেটা যদি হয় বিশ্বের প্রথম রঙিন চায়ের আবিষ্কারক রমেশ রাম গৌড়ের ১০ লেয়ারের রঙিন চা, তাহলে তো আর কথাই নেই। আর এ জন্যই দিন দিন রমেশের রঙিন চায়ের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে।
শ্রীমঙ্গলে যাঁরা বেড়াতে আসেন, তাঁরা সাতরঙা চায়ের স্বাদ নিতে ভোলেন না। রমেশ রাম গৌড় ২০০২ সাল থেকে সাত রঙের এ চা বানিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর দুটি দোকান রয়েছে—শ্রীমঙ্গলের মণিপুরী অধ্যুষিত রামনগর ও কালীঘাট রোডের ১৪ রাইফেল ব্যাটালিয়নের ক্যান্টিনে। তাঁর দোকান দুটির নাম নীলকণ্ঠ টি-কেবিন। তবে রমেশের চা খেতে হলে আপনাকে আসতে হবে দেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা শ্রীমঙ্গলে।ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার আটানিবাজারে একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর অংশীদার ছিলেন রমেশ রাম গৌড়। কিন্তু তাঁর অংশীদার পুরো টাকা আত্মসাৎ করে। ফলে ভাগ্য বদলের উদ্দেশ্যে ২০০০ সালের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে স্ত্রী, তিন ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে শ্রীমঙ্গলে চলে আসেন। সঙ্গে ছিল মাত্র দেড় হাজার টাকা। রামনগর মণিপুরীপাড়ায় বাসা ভাড়া নিয়ে শহরের নতুন বাজারে একটি দোকানে চাকরি নেন। ওই বছরের আগস্টে চাকরি ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) সংলগ্ন কাকিয়াছড়া চা বাগানে একটি চায়ের দোকান দেন। এরপর নিবিড়ভাবে চিন্তা ও পরিশ্রম করে ২০০২ সালে একই গ্লাসে দুইরঙা চা আবিষ্কার করে শ্রীমঙ্গলে তোলপাড় সৃষ্টি করেন। ধীরে ধীরে চায়ের স্তর বাড়াতে শুরু করেন। বর্তমানে এটি সাত স্তরে সাত রঙে এসে দাঁড়িয়েছে।
বর্তমানে আট স্তরের চা ৮৫ টাকা, সাত স্তরের চা ৭৫, ছয় স্তরের ৬০, পাঁচ স্তরের ৫০, চার স্তরের ৪০, তিন স্তরের ৩০, দুই স্তরের চা ২০, হাই স্পেশাল চা ২০, স্পেশাল দুধ চা ১০, গ্রিন চা ১০, আদা চা ১০, লাল চা ১০ টাকা এবং লেবু চা ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে রেল ও সড়কপথে শ্রীমঙ্গল যাওয়া যায়। শ্রীমঙ্গল শহর থেকে রিকশা নিয়ে কালীঘাট রোডের কিছুদূর গেলেই দেখতে পাবেন বড় সাইনবোর্ডে লেখা ‘নীলকণ্ঠ’। ভাড়া নেবে ১০ টাকা। কেবিনটি ১৪ রাইফেল ব্যাটালিয়নের ক্যান্টিনে থাকায় সব ধরনের নিরাপত্তা পাবেন। নিরিবিলি ও খোলামেলা জায়গায় ভেতরে বা বাইরে বসে চা পান করতে পারবেন। দ্বিতীয়টি একই সড়ক ধরে গেলে রামনগরে অবস্থিত। ২০-২৫ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে যেতে পারেন। এখানে চা বাগানের চমৎকার পরিবেশে বসে চা পান করতে পারবেন।