দেখে আসুন জাতীয় চার নেতা কারাস্মৃতি জাদুঘর
আজ ৩ নভেম্বর, ঐতিহাসিক জেলহত্যা দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে বাংলাদেশের ইতিহাসে যুক্ত হয়েছিল আরেকটি কালো অধ্যায়। বাংলার ইতিহাস আবারও রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল বাংলার মায়ের চার বীর সন্তান জাতীয় চার নেতার রক্তে। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার।
এর ভেতরেই রয়েছে জাতীয় চার নেতা কারাস্মৃতি জাদুঘর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালের ৮ মে এই জাদুঘর উদ্বোধন করেন। জাদুঘরটির সামনে রয়েছে জাতীয় চার নেতার মূর্তি। এ ছাড়া মৃত্যুঞ্জয়ী শহীদ স্মৃতিকক্ষে রয়েছে সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও তাজউদ্দীন আহমদ স্মৃতি নিদর্শন গ্যালারি, এ এইচ এম কামারুজ্জামান স্মৃতি নিদর্শন গ্যালারি এবং এম মনসুর আলী স্মৃতি নিদর্শন গ্যালারি। গ্যালারিগুলোর ভেতরে রয়েছে কাচ দিয়ে ঘেরাও করা চার নেতার ব্যবহৃত চৌকি, চেয়ার এবং দেয়ালে রয়েছে বেশ কয়েকটি ছবি। তবে চার নেতার ব্যবহৃত এই স্মৃতিচিহ্নগুলো দেখতে হলে গ্যালারিগুলোর বাইরে থেকেই দেখতে হবে। কারণ, ভেতরে প্রবেশ নিষিদ্ধ।
সম্প্রতি ২৯ জুলাই ২০১৬ সালে নাজিমুদ্দিন রোডে অবস্থিত জাতীয় কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বন্দিদের নবনির্মিত কারাগারে স্থানান্তর করার মধ্য দিয়ে এই কারাগারকে বন্দি রাখা থেকে মুক্তি দেয় সরকার। ৫ নভেম্বর পর্যন্ত কারাগারটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। চাইলে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন নাজিমুদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত জাতীয় চার নেতা কারাস্মৃতি জাদুঘর থেকে।
টিকেট ও প্রদর্শনীর সময়সীমা
কারাগারটির ভেতরে অবস্থিত জাতীয় চার নেতার কারাস্মৃতি জাদুঘরটি দেখতে হলে আপনাকে টিকেট কেটে কারাগারের মূল গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকতে হবে। প্রবেশমূল্য জনপ্রতি ১০০ টাকা, তবে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের টিকেট আবশ্যক নয়। ৫ নভেম্বর পর্যন্ত কারাগারের ভেতরের প্রদর্শনী চলবে। প্রতিদিন তিনবার চলবে এ প্রদর্শনী। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট প্রথম প্রদর্শনী, দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৩টায় দ্বিতীয় প্রদর্শনী এবং বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট থেকে ৫টা ৩০ মিনিট তৃতীয় প্রদর্শনীর সময়।
আরো যা দেখবেন
এ ছাড়া ভেতরে আপনি আরো যা যা দেখতে পাবেন তা হলো বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতার ছবি ও ভিডিও প্রদর্শনী, বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত চেয়ার প্রদর্শনী, বঙ্গবন্ধু কারাস্মৃতি জাদুঘর এবং নানা কারাকক্ষ।
যেভাবে যাবেন
আগেই বলেছি, জাতীয় চার নেতা কারাস্মৃতি জাদুঘরটি দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে নাজিমুদ্দিন রোডে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। আপনি শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকা কিংবা গুলিস্তান থেকে সহজেই রিকশা করে পৌঁছে যেতে পারেন নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। আপনি যদি শাহবাগ, নিউমার্কেট কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে রিকশা করে যেতে চান, তাহলে ভাড়া পড়বে ৫০-৬০ টাকা।
মনে রাখবেন
১. খাদ্যদ্রব্য, পলিব্যাগ, চিপস, পানির বোতল নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করা যাবে না। গেটের সামনে দোকানগুলোতে আপনি আপনার ব্যাগ রাখতে পারেন, তবে সে ক্ষেত্রে টোকেন নিতে ভুলবেন না।
২. ভেতরে নির্দেশনা অনুযায়ী চলাচল করুন।
৩. মোবাইল ও মানিব্যাগ সাবধানে রাখুন।
৪. প্রদর্শিত কোনো কিছুতে হাত দিয়ে স্পর্শ করবেন না।