অপহরণ মামলায় বাবাসহ ছাত্রলীগ নেতা জেলে, কলেজছাত্রীর দাবি ‘বিবাহিত’
কলেজছাত্রী অপহরণ মামলায় রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক (২৬) ও তাঁর বাবা ছলিমুদ্দিনকে (৫০) আজ শনিবার জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে রাজশাহী নগরীর বালিয়াপুকুর এলাকা থেকে পুলিশ জেলা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ রাজ্জাককে গ্রেপ্তার ও কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করেছে। তবে উদ্ধারের পর রাজ্জাক ও কলেজছাত্রী দাবি করেছে, তাঁরা ভালোবেসে তিন মাস আগে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেছেন।
মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ জানান, এসআই রাসেল কবির ও এএসআই রাশিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে শুক্রবার রাত ১২টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর বালিয়াপুকুর এলাকার একটি বাড়ি থেকে আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেপ্তার করে। এ সময় ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় কলেজছাত্রীকে। এর আগে রাত ৮টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে রাজ্জাকের বাবা ছলিমুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি আরো বলেন, ‘উদ্ধারের পর কলেজছাত্রীর শারীরিক পরীক্ষার জন্য আজ শনিবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। আর আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।’
মামলা সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে (২০) দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন আব্দুর রাজ্জাক (২৬)। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বিষয়টি কলেজছাত্রী তার ভাই ও পরিবারের সদস্যদের জানান। এরপর কলেজছাত্রীর ভাই সম্রাট বিষয়টি রাজ্জাকের বাবাকে জানান এবং রাজ্জাককে নিষেধ করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে কলেজছাত্রী বাড়ি থেকে তাঁর চাচা মোহাম্মদ আলী সোনারের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথে রাজ্জাক তাঁর বন্ধু রায়হানের সহযোগিতায় বিয়ের প্রলোভন দিয়ে কলেজেছাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এরপর ওইদিন রাতে ছাত্রীর বড় ভাই দেলোয়ার হোসেন সম্রাট বাদী হয়ে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকসহ তিনজনকে আসামি করে মোহনপুর থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলার অপর দুই আসামি হলেন রাজ্জাকের পিতা ছলিমুদ্দিন (৫০) ও রাজ্জাকের বন্ধু মোহনপুরের গোছা গ্রামের মৃত ইসরাইল সরকারের ছেলে রায়হান (২৪)।
মামলার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রথমে ছলিমুদ্দিনকে নিজ বাড়ি থেকে (৫০) গ্রেপ্তার করে। পরে বাবার দেওয়া তথ্যে আব্দুর রাজ্জাককে রাজশাহী নগরীর বালিয়াপুকুর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
কলেজছাত্রীসহ আব্দুর রাজ্জাককে মোহনপুর থানায় আনা হলে শনিবার তাঁরা দাবি করেন, তারা দুজন দুজনকে ভালোবাসেন। গত ৪ মে তাঁরা উভয়ে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেছেন।
কাবিননামায় দেখা যায়, পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য্য করে গত ৪ মে মোহনপুর উপজেলার বাকশিমইল কাজী অফিসে গিয়ে তাঁরা বিয়ে রেজিস্ট্রি করেন।
মোহনপুর থানায় ওই কলেজছাত্রী স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, রাজ্জাক তাঁকে অপহরণ করেননি। তিন মাস আগে তাঁরা বিয়ে করেছেন। এ সময় কলেজছাত্রী পুলিশকে জানান, তিনি তার বাবা কিংবা ভাইয়ের কাছে যাবেন না। তিনি রাজ্জাকের সঙ্গে যাবেন। পরে পুলিশ কলেজছাত্রীর শারীরিক পরীক্ষার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠিয়ে দেন।