আইভীর গাড়ি-বাড়ি-জমি নেই, আছে ৩০ হাজার টাকার স্বর্ণালঙ্কার

জমে উঠেছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এ নির্বাচনে দুজন হেভিওয়েট প্রার্থীর একজন আওয়ামী লীগের ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। তিনি নির্বাচন কমিশনে (ইসি) হলফনামা জমা দিয়েছেন। সেখানে নানা বিষয়ে তথ্য জানিয়েছেন ইসিকে।
ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী হলফনামায় জানিয়েছেন, তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানে উচ্চতর ডিগ্রিধারী। পেশায় চিকিৎসক। আইভীর মেয়র হিসেবে সম্মানী ছাড়া আর কোনো আয়ের উৎস নেই। তাঁর বিরুদ্ধে বর্তমানে কোনো মামলা নেই। অতীতেও কোনো মামলা হয়নি বলে হলফনামায় ডা. আইভী উল্লেখ করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে আইভী বছরে ১৯ লাখ ৩৮ হাজার টাকা বেতন ও ভাতা পেয়ে থাকেন। দীর্ঘদিন জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বে থাকা এ প্রার্থীর হাতে নগদ রয়েছে এক লাখ ৬৬ হাজার ৪০১ টাকা। আর ব্যাংক ও আর্থিকপ্রতিষ্ঠানে তাঁর নামে জমা আছে ২৩ লাখ ৮২ হাজার টাকা। এসব তথ্য তিনি হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী জানিয়েছেন, তাঁর ৩০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণ ও অলঙ্কার রয়েছে। কোনো দায়-দেনা বা ব্যাংক ঋণ নেই। নিজের নামে গাড়ি, বাড়ি ও জমি নেই। ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর ওপর নির্ভরশীলদের আয়, সম্পদ ও দায় নেই বলেও উল্লেখ করেছেন হলফনামায়।
২০১১ সাল থেকে নাসিকের মেয়রের দায়িত্বে আছেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। এর আগে তিনি নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে মেয়র পদে লড়েন আইভী। ওই সময়ে তিনি মোট আয় দেখিয়েছিলেন ১৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২৬ হাজার ১৭৫ টাকা কর দিয়েছেন। নিজের সম্পত্তি হিসেবে তিনি পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ১৪ শতাংশ কৃষিজমির কথা উল্লেখ করেছিলেন।

২০১১ সালের ৩০ অক্টোবরের নির্বাচনে দেওয়া হলফনামায় ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী আরও উল্লেখ করেছেন, বাবার বাড়িতে তিনি বসবাস করেন এবং তাঁর খরচ স্বামী বহন করেন। তাঁর দুই ছেলের লেখাপড়ার খরচও স্বামী দেন। তাঁর কোনো বাড়ি বা ফ্ল্যাট নেই। কোনো ব্যবসাও নেই। ব্যাংকে শেয়ার বা সঞ্চয়পত্র নেই। অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে ব্যাংকে ১০ লাখ টাকা জমা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। নির্বাচনের খরচ হিসেবে তিনি ওই সময়ে ১০ লাখ টাকা দেখিয়েছেন। মেয়র হিসেবে তিনি এ টাকা সম্মানী হিসেবে পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
এরপর ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন উপলক্ষে দেওয়া হলফনামায় আইভী উল্লেখ করেছেন, মেয়র হিসেবে তিনি বছরে বেতন পান ১১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। আইভীর কোনো ব্যক্তিগত গাড়ি নেই। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকা তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিকপ্রতিষ্ঠানে জমা অর্থের পরিমাণ ১৫ লাখ ২১ হাজার ৪৭১ টাকা। স্বর্ণ ও অন্য অলঙ্কার দুই লাখ ৬০ হাজার টাকার। ইলেট্রনিক সামগ্রী দুই লাখ টাকার। আসবাবপত্র এক লাখ ৯৩ হাজার টাকার। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে যৌথ মালিকানার ১১২ শতাংশ অকৃষি জমির আট ভাগের এক ভাগের মালিক। আইভী পরিবারকে ১৭ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। আইভীর মোট সম্পদের পরিমাণ ৪২ লাখ টাকা।
তবে, এবারের অর্থাৎ ২০২১ সালের হলফনামায় ইলেকট্রনিক সামগ্রী, আসবাবপত্র এবং কৃষি ও অকৃষিজমির স্থলে ‘প্রযোজ্য নয়’ উল্লেখ করে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, ২০১৬ সালে ব্যাংক ও আর্থিকপ্রতিষ্ঠানে তাঁর জমা অর্থের পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ২১ হাজার ৪৭১ টাকা। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ লাখ ৮২ হাজার টাকা।