আটকের পর ইউপিডিএফ নেতার মৃত্যু : খাগড়াছড়িতে সড়ক অবরোধ
খাগড়াছড়িতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে আটকের পর ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) প্রসীত খীসা পক্ষের সংগঠক মিলন চাকমার (৪৪) মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিবাদে আধাবেলা অবরোধ করা হয়েছে। এ ঘটনাকে বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করছে সংগঠনটি।
আজ সোমবার সকাল ৬টা থেকে খাগড়াছড়ির সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। দুপুর ১২টার পর এ সড়ক অবরোধ তুলে নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন ইউপিডিএফ-এর প্রসীত খীসা পক্ষের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের মুখপাত্র নিরন চাকমা।
এর আগে রামগড় যৌথ খামার এলাকায় গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করা হয়। এ ছাড়া মাটিরাঙার বাইল্যাছড়ি এলাকায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আগুন দেয় পিকেটাররা। এ সময় তারা অটোরিকশা চালকের মাথা ফাঁটিয়ে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান এ খবর জানিয়েছেন।
এ ছাড়া খাগড়াছড়ি সদরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, জেলা শহরের শাপলা চত্বর, চেঙ্গী স্কোয়ারসহ আশপাশের সড়কে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করছে। তবে সাজেকগামী পর্যটকবাহী পরিবহণ ও জেলা সদরের সঙ্গে উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ছিল।
এদিকে, খাগড়াছড়ি থেকে ১২টার আগ পর্যন্ত ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লার কোনো পরিবহণ। এতে করে বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ। সাপ্তাহিক হাটের দিন হলেও বাজারের অলিগলি ফাঁকা রয়েছে। গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় দূর-দূরান্তের ক্রেতা-বিক্রেতারা হাটে যেতে পারেননি।
এদিকে, অবরোধের সমর্থনে ভোরে জেলা সদরের নারায়ণ খাইয়া রেড স্কোয়ার চত্বরে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে পিকেটিং করেছে ইউপিডিএফের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কর্মীরা। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পিকেটারদের অবস্থান দেখা গেছে।
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকগামী পরিবহণের লাইনম্যান মো. আরিফ জানান, সাজেকগামী সকালের গাড়ি ছেড়ে যায়নি। নিরাপত্তার স্বার্থে শ্রমিকেরা গাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন না। দুপুর ১২টার পর অবরোধ শেষ হলে গাড়ি চলাচল শুরু হবে।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আব্দুল আজিজ বলেছেন, ‘অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টহল দিচ্ছে।’
গত মঙ্গলবার ভোরে ইউপিডিএফ প্রসীত খীসা পক্ষের উপজেলা সংগঠক মিলন চাকমা অস্ত্রসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহলদলের হাতে আটক হয়েছিলেন বলে দাবি করা হয়। আটকের পর মিলন চাকমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হৃদরোগে মারা যান বলে জানানো হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, নিহত ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অস্ত্র আইনসহ একাধিক মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল।