আমরণ অনশনের চতুর্থ দিনে অসুস্থ শতাধিক রেলওয়ে গেটকিপার

Looks like you've blocked notifications!
চাকরি স্থায়ীর দাবিতে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে  বুধবার অনশনরত রেলওয়ে গেটকিপারেরা। ছবি : সংগৃহীত

রেলওয়ে গেটকিপারের চাকরি স্থায়ীর দাবিতে চলছে আমরণ অনশন। আজ বুধবার অনশনের চতুর্থ দিন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অর্ধশতাধিক গেটকিপার। অসুস্থদের মধ্যে রয়েছেন নারীরাও। এর মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চার জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

‘বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও রেলপোষ্য এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে ১৮৮৯ জন গেট কিপার রাজস্বকরণ বাস্তবায়ন ঐক্য পরিষদ পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চল’-এর পক্ষ থেকে বিক্ষুব্ধ চাকরিজীবীরা আমরণ অনশনে নেমেছেন। গত রোববার থেকে কমলাপুর রেলওয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে তাঁরা এ অনশন শুরু করেছেন। আজ অনশনের চতুর্থ দিন।

অনশনকারীরা বলছেন, রেলওয়ের মান উন্নয়ন প্রকল্পের অধীন এক হাজার ৮৮৯ জন গেটকিপারের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থায়ী না করা পর্যন্ত তাঁরা অনশন ভাঙবেন না।

দীর্ঘ সময় অনশনে অসুস্থদের মধ্যে রয়েছেন কুলাউড়া সেকশনের সাজ্জাদ, টঙ্গির লাকী আক্তার, লিজা, ফেনীর হালিমা খাতুন, ফাতেমা আক্তার, কাওসার, রুবেল, যশোর সেকশনের চামেলি বেগম, সুমাইয়া, শ্রীমঙ্গলের আকুল মণ্ডল, কাউছার আহম্মেদ অনিক, জামালপুরের কাকলি বেগম, লালমনিরহাটের হালিমা আক্তার, পলাশ, হাফিজ মিয়াসহ আরও অনেকে।

অসুস্থরা রেলওয়ে হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া অনশনস্থলে অনেককে দেওয়া হয়েছে প্রাথমিক চিকিৎসা।

আড়াই বছর বয়সি সন্তানকে কোলে নিয়ে আমরণ অনশনে এসেছিলেন গেটকিপার লাকি আক্তার। তিনি অসুস্থ হয়ে এখন রেল হাসপাতালে ভর্তি, চলছে স্যালাইন। লাকির দাবি—এখন তাঁদের অনেকের চাকরির বয়স শেষ।

লাকি বলেন, ‘এ চাকরি স্থায়ী না হলে নতুন করে কোথাও যাওয়ার জায়গা আমাদের নেই। অথচ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী আমাদের স্থায়ী করতে উদ্যোগের নির্দেশ দিয়েছিলেন।’

আরেক অনশনকারী মো. আল মামুন বলেন, ‘আমাদের নিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয় কিংবা রেলওয়ের কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যথা নেই। ৯৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তাঁরা ভ্রুক্ষেপ করেনি। এরই মধ্যে অর্ধশতাধিক গেটকিপার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এরপর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার দায় রেলপথ মন্ত্রণালয়কেই নিতে হবে।’

অনশনরতরা জানান, ২০১৬ সাল থেকে এক হাজার ৮৮৯ জন গেটকিপার অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পান। এর মধ্যে ৫৭২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, ৫৫৫ জন রেলপোষ্য এবং ৩২৫ জন নারী গেটকিপার রয়েছেন।

গেট কিপারদের দাবি—দুই বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রকল্পের কর্মরত গেটকিপারদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করে চাকরি স্থায়ী করতে জরুরি উদ্যোগের নির্দেশ দেন। কিন্তু, রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে আজও দৃশমান কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।