ইউক্রেনের সাড়ে ৫২ হাজার টন গম চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে
ইউক্রেন থেকে ৫২ হাজার ৫০০ টন গম নিয়ে লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী ‘ম্যাগনাম ফরচুন’ নামের একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো ইউক্রেন থেকে কোনো খাদ্যপণ্যের জাহাজ বাংলাদেশে পৌঁছল।
গতকাল বুধবার বিকেলে জাহাজটি গম নিয়ে পৌঁছলে বৃহস্পতিবার খাদ্য নিয়ন্ত্রক (স্টোরেজ অ্যান্ড মুভমেন্ট) আবদুল কাদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, সম্প্রতি ভারত থেকে গম আমদানির চেষ্টা করে সরকার। ভারত রাজি না হওয়ায় রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে জিটুজি ভিত্তিতে গম আনার চুক্তি হয়। যার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে দুই চালানে রাশিয়া থেকে আসে এক লাখ টনের বেশি গম।
এ বিষয়ে আবদুল কাদের জানান, বৃহস্পতিবার ইউক্রেন থেকে আসা জাহাজ থেকে গমের নমুনা সংগ্রহ করেছি। যাচাই বাছাই শেষে সব কিছু ঠিক থাকলে গম খালাসের বিশেষায়িত সাইলো জেটিতে ভিড়বে জাহাজ ‘ম্যাগনাম ফরচুন’। ল্যাব টেস্টে চুক্তি অনুযায়ী ধরন ও মান ঠিকঠাক থাকলে আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে খালাস প্রক্রিয়া শুরু হবে।
গত ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেন উপকূলের কাছে কৃষ্ণসাগরে রাশিয়া নৌ-অবরোধ দিলে ইউক্রেনের খাদ্য রপ্তানি মুখ থুবড়ে পড়ে। এর ফলে বিশ্বজুড়েই খাদ্যসংকট দেখা দিতে শুরু করে। দরিদ্র দেশগুলো বিশেষ রাশিয়া-ইউক্রেন খাদ্য ভাণ্ডারের ওপর নির্ভরশীল দেশগুলো সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ে। এতে খাদ্যপণ্যের দাম হু হু করে বাড়তে শুরু করে। পরে তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়া-ইউক্রেনের সঙ্গে গত আগস্ট মাস থেকে খাদ্য রপ্তানি শুরুর সমঝোতা হয়।
ইউক্রেন অ্যাগ্রো কনসাল্ট ডটকমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৮ সেপ্টেম্বর আফ্রিকা, এশিয়া এবং ইউরোপের দেশগুলোর জন্য এক লাখ ১৫ হাজার টন কৃষিপণ্য নিয়ে চারটি জাহাজ ইউক্রেনের চারনোমরোস্ক ও ইউঝনি বন্দর ছেড়ে আসে। এর মধ্যে চারনোমরোস্ক বন্দর থেকে ম্যাগনাম ফরচুন জাহাজটি ৫২ হাজার ৫০০ টন গম নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে রওনা দেয়।
চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল কাদের বলেন, ‘যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেন থেকে আসা এটি প্রথম খাদ্যবাহী জাহাজ। সরকারি উদ্যোগেই এই গম জিটুজি ভিত্তিতে কেনা হয়েছে গত সেপ্টেম্বরে। এর আগে গত ১৩ অক্টোবর রাশিয়া থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায় ৫২ হাজার টন গমবাহী জাহাজ সিলাক-২। ইউক্রেনের জাহাজের পর রাশিয়া থেকেও গমের চালান চট্টগ্রামে পৌঁছবে।’
আবুল কাদের আরও বলেন, খাদ্য মজুত নিশ্চিত করতে সরকার দ্রুততার সঙ্গে চাল-গম সরকারি উদ্যোগে আনার পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে ১১ লাখ টন চাল সরকারি উদ্যোগে আমদানি হচ্ছে। আর বেসরকারি উদ্যোগে ১৩ লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ব্যবসায়ীদের।’
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সরকারিভাবে রাশিয়া থেকে পাঁচ লাখ টন গম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। সেই অনুমতির প্রথম চালানে ৫২ হাজার টন গম নিয়ে রাশিয়া থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায় ১৩ অক্টোবর।’