সারা দেশে উদযাপন হচ্ছে মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ঈদের দিনেও সদরঘাটে তিল পরিমাণ ঠাঁই নেই। দুপুরের পর থেকে সদরঘাটে মানুষের স্রোত নামে। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে গত কয়েকদিন ধরেই রাজধানী ছাড়ে প্রায় ৭৫ লাখ মানুষ। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঈদের দিন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দুপুর থেকেই যাত্রীদের বেশ ভিড় লক্ষ্য করা যায়। প্রিয়জনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে সবাই গ্রামের বাড়িতে ছুটছে। চাঁদপুর, ভোলা, বরিশাল অঞ্চলের লোকজন লঞ্চে করে ঢাকা ত্যাগ করছেন। কেউ পরিবার নিয়ে আবার কেউ একা নাড়ির টানে বাড়ি যাচ্ছেন, প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে। সবার মধ্যে আপনালয়ে ফেরার তাড়ায় যেন বাড়তি উচ্ছ্বাস কাজ করছে।

একইভাবে যাত্রীদের লঞ্চে তোলার জন্য হাঁক-ডাক দিচ্ছেন কর্মচারীরা। যাত্রীরাও নিজ গন্তব্যের লঞ্চে দ্রুত উঠছেন। মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যে বিশাল বড় বড় লঞ্চ পরিপূর্ণ হয়ে উঠছে। রাজহংসী-৮ নামের নামের লঞ্চে দেখা যায়, যাত্রী কানায় কানায় পরিপূর্ণ। লঞ্চের ছাদও কানায় কানায় পরিপূর্ণ।

রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা মো. আব্দুর রহিম ঈদের দিনে পরিবার নিয়ে পটুয়াখালীতে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন। এনটিভি অনলাইনকে তিনি জানান, ঈদের আগে ভিড় বেশি ছিল। তাই পরিবার নিয়ে যাওয়া কষ্টকর। এ কারণে যেতে পারিনি। তাই এখন যাচ্ছি।  আজকে ভিড়  কম। এমভি এ আর খান লঞ্চের টিকিট পেয়েছি।

এমডি পূবালী-১ লঞ্চের যাত্রী রাজধানীর কদমতলীর বাসিন্দা জীবন ইসলামও ঈদের আগে যেতে পারেননি। বরগুনায় গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাবা মায়ের কবর জিয়ারত করার জন্য বাড়ি যাচ্ছি। ঈদের দিনে কিছু আয় রোজগার হয়। সে কারণে আজকে বাড়ি যাচ্ছি।

ভোলার চরফ্যাশন অভিমুখী এমভি কর্ণফুলী-১২ লঞ্চের যাত্রী সজীব হোসেন জানান, অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে লঞ্চে উঠতে পারেননি। ঈদের দিনেও প্রচুর যাত্রীর চাপ ঘাটে। আজকেও এত মানুষের ভিড় হবে তা বুঝতে পারেননি।

তবে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় থাকলেও পর্যাপ্তসংখ্যক লঞ্চ যাত্রার জন্য তৈরি রয়েছে বলে জানায় বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। 

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ যুগ্ম-পরিচালক (বন্দর) আলমগীর কবির সাংবাদিকদের বলেন, ঈদের আগে নৌপথে ঈদযাত্রার জন্য ১৫০টিরও বেশি লঞ্চ প্রস্তুত করা হয়। বিকেলে ৫০টি লঞ্চ বিভিন্ন গন্তব্যে ঘাট  ছাড়ে। ৭০টি প্রস্তুত থাকে। ঈদের আগেও এ বছর ভিড় ছাড়াই মানুষ যাতায়াত করেছে।  ঈদের দিনেও মানুষ বাড়ি যাচ্ছে।

এদিকে আগত যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করার জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে নৌ-পুলিশ। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে তাঁরা। ‌

এ বিষয়ে সদরঘাট নৌ-পুলিশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়ুম আলী সরদার বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এছাড়া ঈদযাত্রায় জননিরাপত্তার কোনো ঘাটতি যেন না থাকে সেদিকেও আমাদের নজর রয়েছে। অপরাধীরা মানুষের ভিড় দেখে যেন

কোনো ধরনের অপরাধ না করতে পারে, সেদিকে আমাদের কঠোর নজরদারি রয়েছে।