একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগে হাজারো মানুষ
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার জামগ্রামে একটি সেতুর অভাবে চরম দুর্ভোগের শিকার হাজার হাজার মানুষ। খালের উপর সেতু নির্মিত না হওয়ায় কৃষকদের মাঠের ধান কেটে ঘরে তুলতে দ্বিগুণ খরচ করতে হয়। বিভিন্ন সময় স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হলেও পানি ও রোদে প্রতি বছরই সাঁকো বিনষ্ট হয়ে যায়। ফলে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
জানা যায়, আত্রাই উপজেলার ভোঁপাড়া ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম জামগ্রাম। জনসংখ্যার দিক থেকে সহস্রাধিক লোকের বাস এ গ্রামে। গ্রামের প্রায় সব লোকই কৃষক। এ গ্রামের পশ্চিম দিক দিয়ে বয়ে গেছে রক্তদহ লোহাচুরা খাল। খালটি সম্প্রতি পুনর্খননের কারণে অনেক গভীর হয়ে গেছে। খালের পূর্ব পাশে জনবসতি আর পশ্চিম পার্শে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এ গ্রামের কৃষকদের জমি। যুগ যুগ ধরে এ খালের উপর সেতু নির্মিত না হওয়ায় এসব জমিতে আবাদকৃত ধান কেটে বাড়ি পৌঁছাতে কৃষকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ ছাড়া খালের পশ্চিম পাশে রয়েছে গ্রামবাসীর সম্মিলিত কবরস্থান। খালের উপর সেতু না থাকায় বর্ষাকালে লাশ দাফনেও তাদের বিপাকে পড়তে হয়।
এদিকে ওই গ্রামে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী শীতাতলার মেলা। যে মেলায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ভক্ত, ব্যবসায়ী ও দর্শনার্থীরা এসে থাকে। খালের দুই পাড়ে মেলা বসলেও খালের উপর কোনো সেতু না থাকায় তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
জামগ্রামের বাসিন্দা জনি সোনার বলেন, ‘গ্রামবাসীর উদ্যোগে বর্ষায় খালের উপর বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়। এ সাঁকো কোনোমতে বর্ষা পার হলেও ধানের মৌসুমে এটি আর কাজে আসে না। ফলে খালের ওপার থেকে ধান নিয়ে আসা আমাদের জন্য খুবই কষ্টকর হয়।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হানিফ পালোয়ান বলেন, ‘খালের উপর একটি সেতু নির্মাণ আমাদের প্রাণের দাবি। কেননা খালের পশ্চিম পাড়ে রয়েছে গ্রামবাসীর একটি কবরস্থান। সেতু না থাকায় বর্ষাকালে আমাদের মতো ব্যক্তিদের লাশ বহন করতে যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হয়, তেমনি শুষ্ক মৌসুমে আমাদের এলাকার প্রধান আবাদ বোরো ধান ঘরে তুলতেও চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।’
আত্রাই উপজেলা চেয়ারম্যান এবাদুর রহমান বলেন, ‘এখানে খালের উপর একটি সেতু নির্মাণ খুবই প্রয়োজন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বাস্তবায়ন করা হবে।’