এলএসডি বিক্রি-সেবনে গ্রেপ্তার পাঁচ ছাত্র কারাগারে

নতুন মাদক লাইসার্জিক অ্যাসিড ডায়েথিলামাইড (এলএসডি) সেবন ও ব্যবসায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রকে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইদুজ্জামান শরিফ এই আদেশ দেন।
পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আজ আসামিদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে গত ৩১ মে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম আসামিদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড দেন।
গত ৩০ মে রাত থেকে চালানো অভিযানে পাঁচ ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন সাইফুল ইসলাম সাইফ (২০), এস এম মনওয়ার আকিব (২০), নাজমুস সাকিব (২০), নাজমুল ইসলাম (২৪) ও বি এম সিরাজুস সালেকীন (২৪)। তারা রাজধানীর বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
এর আগে গত ৩০ মে সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার মো. আবদুল আহাদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রাজধানীতে ১৫টি গ্রুপ রয়েছে যারা এলএসডি বিক্রি করে আসছে। গ্রুপগুলো এক বছর ধরে এই এলএসডি বিক্রি ও সেবনের সঙ্গে জড়িত। তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের কাজ চলছে।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে নেমে দেশে এলএসডি কারবারের সন্ধান পায় পুলিশ। তারপর থেকে এই ভয়ংকর মাদকের সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছে ডিএমপির বিভিন্ন ইউনিট। প্রথম তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরুর আগেই ২৯ মে রাতে শাহজাহানপুর, রামপুরা, বাড্ডা ও ভাটারা এলাকায় অভিযানে নামে পুলিশ।
ডিসি আহাদ আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা এক বছর ধরে এলএসডি সেবন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত। তারা অনলাইনে তাদের এই ব্যবসার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। অনলাইন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আকৃষ্ট হয়ে তারা এলএসডি সেবন শুরু করে। এখন তারা মূলত বিদেশ থেকে এলএসডি সংগ্রহ করে তা সেবন ও বিক্রি করে চলেছে। তারা মূলত ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে এলএসডি নিয়ে আসত।
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এলএসডির একটি চালান জব্দ করার খবর ২০১৯ সালে জানিয়েছিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএসের একটি বাড়ি থেকে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এলএসডির ২৫টি স্ট্রিপ (ব্লট) এবং পাঁচ মিলিলিটার তরল এলএসডি উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে ৩১ মে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মেহেদি হাসান এনটিভি অনলাইনকে বলেছিলেন, ২০১৯ সালের ঘটনাটির তদন্ত করতে গিয়ে গুলশান-বনানীতে আরও কয়েকটি চক্রের এলএসডি বিক্রির তথ্য তারা জানতে পেরেছিলেন। তবে চক্রের সদস্যরা তখন গা ঢাকা দিয়েছিলেন।