এসএমএসে সাক্ষীকে তারিখ জানালে বিচারপ্রার্থীর হয়রানি কমবে : আইনমন্ত্রী
ফৌজদারি মামলায় বিদ্যমান সমন জারি প্রক্রিয়ার পাশাপাশি সাক্ষীর মোবাইল ফোনে এসএমএস প্রদানের মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ অবহিতকরণ কার্যক্রম বিচারপ্রার্থী জনগণ ও রাষ্ট্র, উভয়ের সময় ও খরচ কমাবে।
বিচারপ্রার্থী জনগণের দুর্ভোগ ও হয়রানি কমাবে। এ ছাড়া বিচার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে এবং বিচারের দীর্ঘসূত্রতা কমাবে।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বিদ্যমান সমনজারি পদ্ধতির পাশাপাশি এসএমএসের মাধ্যমে সাক্ষগ্রহণের তারিখ মামলার সাক্ষীকে অবহিতকরণ কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে মামলার দীর্ঘসূত্রতার অন্যতম কারণ আদালতে সময়মতো সাক্ষীর হাজির হতে না পারা, সাক্ষীর অনুপস্থিতি কিংবা সাক্ষীর গরহাজির। এর পেছনে অন্যতম কারণ হলো সাক্ষীর সময়মতো সমন না পাওয়া। এর পেছনেও রয়েছে যথেষ্ঠ যুক্তি ও কারণ। সাক্ষীকে এসএমএস প্রেরণ কার্যক্রম সব কারণ ও যুক্তি খণ্ডন করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, এই সার্ভিসের মাধ্যমে মামলার সাক্ষীরা আদালতে বিচারাধীন মামলার ধার্য তারিখ সম্পর্কে দ্রুততম সময়ে ও সহজে জানতে পারবেন এবং তাঁরা তা একই সময়ে জানতে পারবেন। যেহেতু ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ও মোবাইল ফোনে এই মেসেজ প্রদান করা হবে, তাই কেউ মেসেজ পেয়ে অস্বীকারও করতে পারবেন না। এতে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সাক্ষীদের মধ্যেও একটি দায়বদ্ধতা তৈরি হবে। ফলে আদালতে সময়মতো সাক্ষী উপস্থাপন ত্বরান্বিত হবে। স্বল্প সময়ে ও সহজে ন্যায়বিচার প্রদান করা সম্ভব হবে।
আনিসুল হক বলেন, পাইলট ভিত্তিতে কুমিল্লা ও নরসিংদীতে সমন জারির এসএমএস পদ্ধতি চালু করা হলো। এ পদ্ধতিতে আদালত কর্তৃক কোনো মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ নির্ধারিত হলে, তা ডিজিটাল সিস্টেম ব্যবহার করে সাক্ষীদের জানানো হবে। পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত পদ্ধতিতেও সমন পাঠানো হবে। পাইলট ভিত্তিতে গৃহীত এ কার্যক্রম পর্যালোচনা করে এবং এ থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে সারা দেশে এ কার্যক্রম বিস্তৃত করা হবে।
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বলেন, এসএমএস বার্তার মাধ্যমে সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ মামলার সাক্ষীকে অবহিতকরণের বিষয়টি ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ অগ্রযাত্রায় আরও একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, কোভিড লকডাউনকালে ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা এবং এসএমএসে গৃহীত কার্যক্রমের মাধ্যমে বিচার বিভাগের যে যাত্রা শুরু হলো—এর সুদূর প্রসারি প্রভাব কাজে লাগবে। একটি ছোট্ট এসএমএসের মাধ্যমে অনেক জটিলতার সমাধান হবে।
মন্ত্রী বলেন, এ বছরের মধ্যে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে ডিজিটাল সংযোগ পৌঁছে দিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ বদ্ধপরিকর। ইতোমধ্যে দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকায় ডিজিটাল সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। হাওর, দ্বীপ, চরসহ দুর্গম অঞ্চলে এ সংযোগ পৌঁছানোর কাজ শুরু হয়েছে। আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির, কুমিল্লার জেলা ও দায়রা জজ মো. আতাবুল্লাহ, নরসিংদীর জেলা ও দায়রা জজ মোসতাক আহমেদ, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দীন প্রমুখ বক্তব্য দেন।