করোনায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলীফ লায়লার মৃত্যু
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বেগম আলীফ লায়লা (৪৬) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর সিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বেগম আলীফ লায়লার অকাল মৃত্যুতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি), নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন।
জানা যায়, বিভিন্ন উপসর্গ থাকায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলীফ লায়লা রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নমুনা দিলে গত ২৭ জুন তাঁর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে কয়েকদিন আগে তাঁকে সিটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর স্বামীও করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।
আলীফ লায়লার এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। তাঁর স্বামী পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত আছেন।
মৌলভীবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন জানান, আলীফ লায়লা প্রায় দুই মাস আগে রাজনগরে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়। কয়েকদিন তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। বুধবার রাতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
ইসির শোক : নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্মসচিব ও পরিচালক (জনসংযোগ) এস এম আসাদুজ্জামানের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বেগম আলীফ লায়লার অকাল মৃত্যুতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন। মহান আল্লাহ বেগম আলীফ লায়লাকে বেহেস্ত নসিব করুন এবং তাঁর শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের শোক সহ্য করার ক্ষমতা দান করুন।
বেগম আলীফ লায়লা ১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চাকরিতে যোগ দেন। মৃত্যুকালে তিনি স্বামী, এক ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব রেখে গেছেন।
এদিকে দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের ১২০ কর্মকর্তা-কর্মচারী আক্রান্ত হয়েছেন। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে কয়েকজন মারাও গেছেন। গতকাল বুধবার ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সভাপতিত্বে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে জুম মিটিংয়ের সময় এই তথ্য জানানো হয়।
হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, এ ভাইরাসে গত ১ এপ্রিল চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতাউর রহমান এবং গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাইবুর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারসহ ইসি সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ের ১২০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাঁরা অফিসের কাজেও যোগ দিয়েছেন। কেউ কেউ এখনও অসুস্থ আছেন।