কালনা-নড়াইল-যশোর সড়ক প্রশস্তকরণে ৮২ কোটি টাকা বরাদ্দ
কালনা-নড়াইল-যশোর ৫০ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণে মোট ৮২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। আগামী ২৫ জুন যান চলাচলের জন্য পদ্মা সেতু খুলে দেওয়ার পর নিরাপদে যানবাহন চলাচলের জন্য সড়কটির দুপাশে মোট ৬ ফুট প্রশস্ত করা হচ্ছে বলে সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সওজ সূত্রে জানা গেছে, কালনায় ৯৫৯.৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মধুমতি নদীতে সেতু নির্মাণের কাজ শেষের পথে। এ সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলে ঢাকা-চট্টগ্রামের সঙ্গে কালনা সেতু হয়ে নড়াইল, যশোর, বেনাপোল স্থলবন্দর, সাতক্ষীরা ও আশপাশের জেলায় যোগাযোগ সহজতর হবে। সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। এখন পর্যন্ত ৯০ ভাগের বেশি কাজ শেষ হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
চলতি বছরের আগস্ট মাসে কালনা সেতু ও সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হবে এবং সেপ্টেম্বর মাসে এ সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সওজ-এর খুলনা জোন অফিসের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ আসলাম আলী।
সৈয়দ আসলাম আরও জানান, বেনাপোল থেকে যশোর-নড়াইল-ভাটিয়াপাড়া হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত ছয় লেনের সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পটি প্রক্রিয়াধীন।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং নড়াইল বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছাদেক আহম্মেদ খান জানান, কালনা সেতু চালু এবং কালনা থেকে যশোর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণের মধ্য দিয়ে পুরো অঞ্চলের চেহারা বদলে যেতে শুরু করেছে। এ অঞ্চলের অর্থনীতি ও সামাজিক ক্ষেত্রেও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসছে।
পরিবহণ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কালনা সেতু চালু হওয়ার পর নড়াইল, যশোর, বেনাপোল স্থলবন্দর, সাতক্ষীরা ও খুলনা থেকে ঢাকায় যাতায়াতকারী পরিবহণ মাগুরা-ফরিদপুর হয়ে যাতায়াতের পরিবর্তে কালনা হয়ে রাজধানী ঢাকাসহ চট্টগ্রাম ও অন্যান্য জেলায় কম দূরত্বে যাতায়াত করতে পারবে। এতে নড়াইল-ঢাকা, যশোর-ঢাকা ও বেনাপোল-ঢাকার দূরত্ব কমপক্ষে ১০০ কিলোমিটার করে কমবে। একইভাবে ঢাকার সঙ্গে শিল্প ও বাণিজ্যিক শহর নওয়াপাড়া ও মোংলা বন্দরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্য জেলার দূরত্বও কমে যাবে।
কালনা-নড়াইল হয়ে যশোর পর্যন্ত এবং কালনা-নড়াইল-ধলগ্রাম হয়ে বসুন্দিয়া পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ হলে উভয় পারের অন্তত ১০টি জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের যাতায়াত সহজতর হবে বলে জানিয়েছেন নড়াইল জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী জহিরুল হক জহির।
নড়াইল সওজ-এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এ এম আতিক উল্লাহ জানান, কালনা থেকে নড়াইল হয়ে ভাংগুড়া পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার সড়কটি বর্তমানে ১৮ ফুট চওড়া থাকলেও প্রশস্তকরণের মাধ্যমে ২৪ ফুট চওড়া করা হচ্ছে। নড়াইল সওজ-এর অংশে সড়ক প্রশস্তকরণের জন্য মোট ৪৭ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঠিকাদারকে সড়ক প্রশস্তকরণের কার্যাদেশ দেওয়া হবে।
সওজ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, কালনা-নড়াইল-যশোর সড়কের যশোর অংশে রয়েছে ভাংগুড়া থেকে যশোর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়ক। ভাংগুড়া থেকে যশোর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কটিও প্রশস্ত করা হচ্ছে। ১৮ ফুট চওড়া এ সড়কটি নতুনভাবে ২৪ ফুট করা হচ্ছে। ২০ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণের জন্য এরই মধ্যে ৩৫ কোটি টাকা দরপত্র আহ্বান করে তা মূল্যায়ন পক্রিয়ায় রয়েছে। শিগগির ঠিকাদার নির্বাচনের মাধ্যমে কার্যাদেশ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।