কিশোরগঞ্জে কৃষক হত্যা মামলায় ২ জনের ফাঁসি ও ১৩ জনের যাবজ্জীবন
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে কৃষক তাজুল ইসলাম হত্যা মামলায় দুজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার জেলার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আবদুর রহিম এ রায় দেন। রায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও যাবজ্জীবন কারাণ্ডাদেশ পাওয়া প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে আর্থিক জরিমানার আদেশও দিয়েছেন বিচারক।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে নিযুক্ত এপিপি অ্যাডভোকেট যজ্ঞেশ্বর রায় চৌধুরী রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রায় ঘোষণার সময় ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাইফুল ইসলাম ও গোলাপ মিয়া এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ১১ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি মিজান ও সুলতান পলাতক রয়েছেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন মো. সাইদুর, আব্দুল হামিদ, আব্দুর রহিম, বাদল মিয়া, মোস্তফা, রায়হান, হাবিব, ফারুক, জুলে বেগম, আনিছা বেগম ও হেনা বেগম।
এ ছাড়া সোহেল নামের এক আসামি অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তার মামলা শিশু আদালতে বিচারাধীন আছে। আসামিরা সবাই নিহত তাজুল ইসলামের নিকটাত্মীয় ও একই এলাকার বাসিন্দা।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, জমি-জমা সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে কটিয়াদী উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর নিকটাত্মীয় ও একই এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি দুপুরে সিদলচর খালের উত্তর পাশে নিজের জমিতে চাষ করার সময় আসামিরা দলবদ্ধভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাজুল ইসলামের ওপর হামলা চালান। হামলায় তাজুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই নিহত হন এবং আরও চারজন আহত হন।
এ ঘটনায় নিহত তাজুল ইসলামের মেয়ে মালা বেগম বাদী হয়ে ১৬ জনকে আসামি করে কটিয়াদী থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ১৯ মে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
মামলার বাদী মালা বেগম রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘১০ বছর পর মামলার রায়ে আমি বাবা হত্যার ন্যায়বিচার পেয়েছি। এ রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়।’
আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট অশোক সরকার মামলাটি পরিচালনা করেন। তিনি রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার মক্কেলরা ন্যায়বিচার পাননি। তাঁরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।’