‘কোনো অন্যায়ের কাছে মাথানত করেননি বঙ্গবন্ধু’
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা বলেছেন, ‘কোনো অন্যায়ের কাছে মাথানত করেননি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঘরে ঘরে মুজিবের আদর্শের দুর্গ তৈরি করে তার আলো ছড়িয়ে দেব।’
আজ মঙ্গলবার রাতে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া শুভেচ্ছা বক্তব্যে এ কথা বলেন শেখ রেহানা।
ভাষণটি জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নির্মিত ‘মুক্তির মহানায়ক’ অনুষ্ঠানে সম্প্রচার করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা বলেন, ‘সুন্দর,সমৃদ্ধ, দারিদ্র্য, দুর্নীতি ও নিরক্ষরতামুক্ত দেশ গড়ব। সোনার বাংলাকে ভালবাসব। পরশ্রীকাতরতা থেকে নিজেদের মুক্ত রাখব। ঘরে ঘরে মুজিবের আদর্শের দুর্গ তৈরি করে তার আলো ছড়িয়ে দেব। কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে শেখ রেহানা বলেন, ‘এই দিনে আমরা সবাই মিলে অঙ্গীকার করি- আমাদের যা কিছু আছে,তাই দিয়ে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাব।’
বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘কোনো অন্যায়ের কাছে মাথানত করেননি তিনি। লোভ-লালসা ভোগ-বিলাস থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন, করেননি আপস। মানবকল্যাণই ছিল তাঁর ধ্যান-ধারণা, বিশ্বাসে-নিঃশ্বাসে।’
শেখ রেহানা বলেন, ‘বাবা বলতেন,ত্যাগ-তিতিক্ষা ছাড়া কোনো জাতি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না। একটা মানুষ দেশের জন্য,মানুষের জন্য কতখানি ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন, তা আমরা খুঁজে পাই তাঁরই লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী থেকে।
মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের জনপ্রিয়তার কথা তুলে ধরে শেখ রেহানা বলেন, ‘এমন মানুষ পৃথিবীতে খুব কমই আসেন। আসলেও তাঁরা ক্ষণস্থায়ী হন। আমার বাবা আমাদের মাঝে নেই। তিনি আছেন কোটি মানুষের হৃদয় জুড়ে।’
বছরব্যাপী মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাস বিপর্যয়ের কারণে তা বাতিল করা হয় এবং মুক্তির মহানায়ক অনুষ্ঠান নির্মাণ করে তা সম্প্রচার করা হয়।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আতশবাজির মাধ্যমে মুক্তির মহানায়ক অনুষ্ঠানটির শুরু হয়। এরপর শত শিশু-কিশোরের কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা। জাতীয় সঙ্গীতের পর সম্প্রচার করা হয় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া রাষ্ট্রপতির ভাষণ।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে নির্মমভাবে সপরিবারে নিহত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশের বাইরে থাকায় সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর বড় মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ছোট মেয়ে শেখ রেহানা।
শেখ মুজিবুর রহমানের বাবা-মা ও সহধর্মণীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে শেখ রেহানা বলেন, ‘এই দিনে আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি মুজিবের রত্নগর্ভা মা শেখ সায়রা খাতুন এবং বাবা শেখ লুৎফর রহমানকে। আরও স্মরণ করি চিরদিনের সুখে-দুঃখে মরণের সাথী তাঁর প্রিয় রেণুকে।’