খাজনা দিতে পাড়ি দিতে হয় ৩০ কি.মি পথ!

ইউনিয়নের এক প্রান্তে ভূমি অফিস। খাজনা পরিশোধে ৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয় সাধারণ মানুষকে। প্রতিনিয়ত এমন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে নড়াইল সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়নের ৩৫ হাজার মানুষ। দুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে এলাকাবাসী ভূমি অফিস ইউনিয়নের মধ্যস্থানে নির্মাণের দাবি করেছে।
বিছালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হেমায়েত হুসাইন ফারুক জনদুর্ভোগ নিরসনে ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থানে ভূমি অফিস নির্মাণে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিছালী ইউনিয়ন জেলার শেষ প্রান্তে অবস্থিত। দক্ষিণে খুলনার ফুলতলা, পশ্চিমে যশোরের অভয়নগর, পূর্বপাশে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার শিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের সীমানা। ১২টি গ্রাম নিয়ে ইউনিয়ন গঠিত। ৩৫ হাজার মানুষ এখানে বসবাস করেন। ইউনিয়নের ভূমি অফিসটি আড়পাড়া সংলগ্ন মির্জাপুর বাজারে। ভবনটি এখন জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। সরকারি কাগজপত্র সংরক্ষণে রাখতে ঝুঁকি রয়েছে।
নতুন ভবন নির্মাণে ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের আড়পাড়া-মির্জাপুর গ্রামের কুটিরভিটা এলাকায় সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে।
আড়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. সজল শেখ বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে নায়েব অফিসের (ভূমি অফিস) লোকজন এখানে সাইনবোর্ড লাগিয়েছে। ভূমি অফিসটির সাইনবোর্ড ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডে পড়েছে। অফিসটি ইউনিয়নের মাঝখানে হলে সবার জন্য ভালো হতো।’
ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা মো. সোহেল বলেন, ‘নতুন ভূমি অফিস নির্মাণের জন্য আগের চেয়ারম্যান মো. আনিচুর রহমান আড়পাড়া-মির্জাপুর মৌজার কুটির ভিটায় সাইনবোর্ড টাঙানোর নির্দেশ দিলে আমরা সেখানে লাগাই। এখানে ভূমি অফিস হলে ইউনিয়নের এক কোনায় হয়ে যায়। ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থানে হলে ভালো হয়। ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থান হলো চাকই-মধুরগাতি।
সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিচুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
বর্তমান চেয়ারম্যান মো. হেমায়েত হুসাইন ফারুক বলেন, ‘জনদুর্ভোগের কথা ভেবে ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থান চাকই-মধুরগাতি গ্রামে ভূমি অফিসের নতুন ভবন নির্মাণে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছি। আশা করছি জেলা প্রশাসক মানুষের জনদুর্ভোগের বিষয়টি অনুধাবন করবেন।’
জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বিছালী ইউনিয়নের ভূমি অফিস নির্মাণে স্থান নির্ধারণ নিয়ে স্থানীয় মানুষের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব রয়েছে। ভূমি অফিস ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থানে নির্মাণের জন্য নবাগত ইউপি চেয়ারম্যান মো. হেমায়েত হুসাইন একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (রাজস্ব) আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।’