খাস কামরায় বসে বিচারক কামরুন্নাহার শুনলেন বিচারিক ক্ষমতা নেই
৭২ ঘণ্টা পর ধর্ষণ মামলা না নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহারের বিচারিক ক্ষমতা প্রত্যাহারের ঘোষণার আগেই আজ রোববার সকাল ৯টার দিকে আদালতে পৌঁছান বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার। সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালে প্রতিদিন নিয়মানুযায়ী সকাল সাড়ে ১০টায় বিচারকাজ শুরু হয়।
বিচারকাজ শুরু হওয়ার আগেই খাস কামরায় বসে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা পান বিচারক কামরুন্নাহার। এ কারণে তিনি আর এজলাসে বসেননি বলে আদালত সূত্রে জানা যায়।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনি খাসকামরায় অবস্থান করছিলেন।
আজ রোববার সকালে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও বিশেষ কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বেগম মোছা. কামরুন্নাহারের বিচারিক ক্ষমতা প্রত্যাহারের আদেশ দেওয়া হয়।
মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, ‘আজ রোববার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সেই বিচারক আর আদালতে বসতে পারবেন না। তাঁর ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করে তাঁকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করতে চিঠি পাঠিয়েছেন সুপ্রিমকোর্ট।’
সুপ্রিমকোর্টের মুখপাত্র আরও বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি সুপ্রিমকোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিগণের আলোচনাক্রমে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহারকে আজ রোববার (১৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে আদালতে না বসার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করে তাঁকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট থেকে সকাল সাড়ে ৯টায় আইন মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠানো হয়েছে।’
গত ১১ নভেম্বর রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণার পর পর্যবেক্ষণে আদালত পুলিশের উদ্দেশে ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পর মামলা না নিতে ‘পরামর্শ’ দেন। ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহারের আদালত আলোচিত এ মামলার রায় দেন।
এর আগে গতকাল শনিবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার বিচারকের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দেওয়া হবে।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘অবজারভেশনে তিনি (আইনজীবী) যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ বেআইনি ও অসাংবিধানিক। বিচারক হিসেবে তাঁর দায়িত্ব পালন নিয়ে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেজন্য আগামীকাল (আজ রোববার) প্রধান বিচারপতিকে একটি চিঠি লিখছি।’