খুলনায় তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2023/04/17/khulnaa.jpg)
খুলনায় ২৩ বছরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল রোববার (১৬ এপ্রিল) খুলনায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। প্রচণ্ড রোদে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ কাজ করতে হাঁপিয়ে উঠছেন। আর অসহনীয় গরমের সঙ্গে লোডশেডিংয়ে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। গত চার দিন ধরে প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাত-আট ঘণ্টা করে লোডশেডিং হচ্ছে। ফলে কষ্ট ভোগ করছে ওই এলাকার মানুষ।
খুলনা আবহাওয়া কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রোববার চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন এই দুই জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর খুলনায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া বাগেরহাটের মোংলায় ৪১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সাতক্ষীরা ও কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
নগরীর বাগমারা এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক সিদ্দিক মোল্লা বলেন, ‘রোদে মনে হচ্ছে চামড়া জ্বলে যাচ্ছে। অসহ্য গরম। ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি, এজন্য নামতে হচ্ছে। তবে, গরমের কারণে সেই অনুযায়ী যাত্রী নেই। দুপুরে রোদের তাপ অনেক বেশি থাকে, তখন ছায়া জায়গায় বিশ্রাম নেই। আজকে অন্যান্য দিনের চেয়ে গরম অনেক বেশি।’
নগরীর খালিশপুর নয়াবাটি এলাকার বাসিন্দা রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘এই মাসে গরম বেড়েছে। রমজানের শুরুতে এমন গরম ছিল না। গরমের কারণে রাস্তায় বের হলে ছাতা ব্যবহার করতে হচ্ছে। আর ঘরে গেলে বিদ্যুৎ থাকছে না। শুধু দিনে নয়, মধ্যরাতেও বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। এই গরমে ঘন ঘন বিদ্যুৎ না থাকায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।’
ফুলতলা উপজেলার দামোদর গ্রামের বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘অসহনীয় গরম আর বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ কিছুটা কমবে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি যেন বৃষ্টি হয়।’
এদিকে গরমে বেড়েছে হাতপাখার কদর। বিভিন্ন দোকানে হাতপাখা কিনতে ভিড় করছে সাধারণ মানুষ। নগরীর হাউজিং বাজারের দোকানি মুসলিমা বেগম বলেন, ‘গত কয়েকদিন গরম বেশি থাকায় হাতপাখার বিক্রি বেড়েছে। প্রতিটি হাতপাখা ৩০ টাকায় বিক্রি করছি।’
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী সবুজ আহমেদ বলেন, ‘প্রচণ্ড গরম আবার বিদ্যুৎও থাকছে না। ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। গরমে একটু প্রশান্তির জন্য আজ ৯০ টাকা দিয়ে তিনটি হাতপাখা কিনেছি।’
খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, ‘খুলনা বিভাগে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। রোববার খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা বিগত ২৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আরও ২-৩ দিন তাপমাত্রা অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর খুলনায় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’