গাজীপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধীদের পল্লীবিদ্যুতের ‘অগ্রাধিকার সেবা কার্ড’ প্রদান
দেশে প্রথমবারের মতো অগ্রাধিকারভিত্তিতে বিদ্যুৎসেবা মানুষের ঘরে পৌঁছে দিতে ‘অগ্রাধিকার সেবা কার্ড’ চালু করেছে গাজীপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১। আজ সোমবার দুপুরে সমিতির কার্যালয়ের সভাকক্ষে এ সেবা কার্ড বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী ও রেমিটেন্স যোদ্ধাসহ চার ধরনের মানুষের মধ্যে এ সেবা কার্ড বিতরণ করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির।
গাজীপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১-এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী যুবরাজ চন্দ্র পালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেবা কার্ড গ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিন্নাত আলী, প্রবাসী রেমিটেন্স যোদ্ধার স্ত্রী শাহিনা আক্তার শম্পা, প্রতিবন্ধী মনোয়ারা বেগম।
অনুষ্ঠানে ১৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, পাঁচজন রেমিটেন্স যোদ্ধা, একজন প্রতিবন্ধী ও একজন সিনিয়র সিটিজেনসহ ২২ জন গ্রাহককে পল্লীবিদ্যুৎ অগ্রাধিকার সেবা কার্ড প্রদান করা হয়।
এর আগে সকালে সমিতি প্রাঙ্গণে পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি জিএমপির পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির।
সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী যুবরাজ চন্দ্র পাল জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে গাজীপুর পল্লীবিদ্যাৎ সমিতি বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রবাসী রেমিটেন্স যোদ্ধার স্ত্রী, মা অথবা বৃদ্ধ বাবা, সিনিয়র সিটিজেন এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধ্যে ‘অগ্রাধিকার সেবা কার্ড’ প্রদানের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।’
যুবরাজ চন্দ্র পাল আরও বলেন, ‘যাদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি তাদের অনেক সময় সেবা পেতে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে সেবা নিতে হয়। বার্ধক্যজনিত কারণে অথবা যাদের সন্তান নেই কিংবা থাকলে প্রতিবন্ধী, তাদের বিল প্রদানসহ অন্য সেবা নিতে বেশ কষ্ট করতে হয়। এসব বিষয় বিবেচনা করে এই নতুন উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আমাদের দেশের রেসিটেন্স যোদ্ধারা বিদেশে গিয়ে আমাদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছেন। তাদের স্ত্রী ও পরিবারের লোকজন সেবা পেতে বিভিন্ন দালালদের মাধ্যমে প্রতারিত হয়। তাই এসব সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা এই উদ্যোগটি নিয়েছি। এই পরিকল্পনা আমরা কেন্দ্রীয় পল্লীবিদুৎ অফিসে পাঠাব যেন এটা বৃহৎভাবে চালু করা হয়। এটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে শুরু করা হয়েছে, যা অন্য কোনো বিদ্যুৎ প্রতিষ্ঠানে নেই। গাজীপুরে এটিই প্রথম।’
আয়োজকরা জানান, মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী ও রেমিটেন্স যোদ্ধাসহ পল্লীবিদ্যুতের চার শ্রেণির গ্রাহকদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে সেবা নিশ্চিত করতে সমিতির সিনিয়র জিএম প্রকৌশলী যুবরাজ চন্দ্র পালের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এজিএম (এইচআর) জহিরুল ইসলাম ও এজিএম (অর্থ ও হিসাব) মো. মাহমুদুল হাসান মুন্না ‘অগ্রাধিকার সেবা কার্ড’ এর পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। এ উদ্যোগটি সফল বাস্তবায়ন হলে পরবর্তীতে সব শ্রেণির গ্রাহককে ঘরে বসে বিদ্যুতের সব সেবা দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার মো. জাকির হাসান, বাংলাদেশ পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আলতাফ হোসেন চৌধুরী, নির্বাহী প্রকৌশলী সুজন শাহ, গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর সভাপতি আব্বাস আলী, গাজীপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ডিজিএম (কারিগরি) মো. জাহিদুল ইসলাম, এজিএম (এইচআর) জহিরুল ইসলাম, এজিএম (সদস্য সেবা) মো. রিয়াদ কাইয়ুম ও এজিএম (অর্থ ও হিসাব) মো. মাহমুদুল হাসান মুন্না প্রমুখ।