ঘূর্ণিঝড় মোখার ঝুঁকি কমেছে বাংলাদেশের : আবহাওয়া অধিদপ্তর
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশের টেকনাফ অঞ্চল থেকে ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণে মিয়ানমারের সিটুই অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বাংলাদেশে ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি অনেকটা কমে এসেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আজ রোববার (১৪ মে) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীতে আবহাওয়া ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান এ তথ্য জানান।
আজিজুর রহমান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি আজ (রোববার) দুপুর ১২টা নাগাদ স্থলভাগে উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ বিকেল ৩টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করবে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি টেকনাফ থেকে ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ দিয়ে অতিক্রম করছে। সেটি মিয়ানমারের সিটুই অঞ্চল দিয়ে অতিক্রম করায় বাংলাদেশের ঝুঁকির পরিমাণ, বিশেষ করে কক্সবাজার, টেকনাফ অঞ্চলে ঝুঁকি অনেকটাই কম। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি রয়েছে মিয়ানমারের সিটুইয়ে। আমাদের অংশে ঝুঁকি অনেকটা কমে এসেছে।’
আজ রোববার (১৪ মে) সকাল ৯টার দিকে উপকূল অতিক্রম শুরু করে এ ঘূর্ণিঝড়। আজ রোববার (১৪ মে) সকাল সকাল সাড়ে ১০টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (উনিশ) এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হয়েছে।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমি ধস হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার (১৪ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (উনিশ) বলা হয়, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। এছাড়া উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ঝালকাঠী, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপের পার্থক্যের আধিক্যের কারণে আজ রোববার (১৪ মে) উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। সেইসঙ্গে উপকূলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ঝালকাঠী, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ এবং তার নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়ার বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা উত্তর-উত্তর-পূর্বদিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ রোববার (১৪ মে) সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল। আজ সকাল ৯টার দিকে কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ রোববার (১৪ মে) বিকেল বা সন্ধ্যা নাগাদ মিয়ানমারের সিটুয়ের নিকট দিয়ে কক্সবাজার ও উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।