চলতি মাসে মশা বাড়বে চার গুণ : গবেষণা

রাজধানী ঢাকা এবং এর আশপাশের এলাকায় মশার ঘনত্ব দ্রুত বাড়ছে। গত বছরের ডিসেম্বর ও এ বছরের জানুয়ারির তুলনায় বর্তমানে মশার ঘনত্ব প্রায় দ্বিগুণ। গত ছয় মাসের মশার ঘনত্বের মাত্রা, তাপমাত্রা, আদ্রতা, বৃষ্টিপাত ইত্যাদি পর্যালোচনা করে মশার পূর্বাভাস মডেল তৈরি করে দেখা গেছে চলতি মাসে মশার ঘনত্ব চরমে পৌঁছাবে। জরুরি পদক্ষেপ না নিলে তা চার গুণ বৃদ্ধি পাবে।
সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। গবেষণাটি পরিচালনা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘প্রতি মাস অন্তর মশার ঘনত্ব কতটুকু বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা তুলনা করার জন্য গবেষণা করা হয়েছে। গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসের তুলনায় বর্তমানে মশার ঘনত্ব প্রায় দ্বিগুণ। চলতি মাসে তা বৃদ্ধি পেয়ে চারগুণ হবে।’
গবেষণা বলছে, ঢাকা শহরের ছয়টি স্থানকে নমুনা সংগ্রহের জন্য বেছে নেওয়া হয়। এসব এলাকায় গড় ঘনত্বে প্রতি ডিপে (মশার ঘনত্ব বের করার পরিমাপক) ৬০টির বেশি মশা পাওয়া গেছে। যেখানে অন্যান্য সময় ১৫-২০টি মশা পাওয়া যেতো। স্থানগুলো হলো—উত্তরা, গুলশান, মোহাম্মদপুর, খিলগাঁও, কাঠালবাগান এবং পুরান ঢাকার সদরঘাট এলাকা। তবে এই মশাগুলোর অধিকাংশই কিউলেক্স মশা। ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশার ঘনত্ব এক শতাংশেরও কম।
কিউলেক্স মশার কামড়ে অনেক সময় ফাইলেরিয়া বা গোদ রোগ হয়ে থাকে। আগে দেশের উত্তরবঙ্গে এ রোগ দেখা গেলেও রাজধানীতে এর নজির খুবই কম। তার পরেও সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন এ অধ্যাপক।
গবেষণায় আরও বলা হয়, বছরের শুরুর দিকে নর্দমা, ড্রেন, ডোবা ইত্যাদির পচা পানিতে এসব মশা ডিম পারে। ভারী কোনো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পানি বহমান না থাকার কারণে কিউলেক্স মশার জন্মানোর হার বেড়ে যায়। এ সময়টায় তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার সঙ্গে সঙ্গে পানিতে অর্গানিক বস্তুর পরিমাণ বেশি থাকে। ফলে মশার ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায়।
মশার বিস্তার রোধে করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. কবিরুল বাশার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘প্রথমেই ডোবা ও নর্দমাগুলো পরিষ্কার করতে হবে। এসব ডোবার ময়লা পানি মশার আতুরঘর। পরিষ্কার করা নর্দমায় প্রতি সাত দিন অন্তর লার্ভিসাইড (মশার লার্ভা মারার কীটনাশক) প্রয়োগ করতে হবে। এ ছাড়া পূর্ণাঙ্গ মশা ও লার্ভাদমনে জরুরি ভিত্তিতে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম করে মশা নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।’