টাকা ফেরতের দাবিতে গ্রাহকদের ‘বরসা’ এনজিও ঘেরাও
বকেয়া ১২৫ কোটি টাকা ফেরতের দাবিতে সাতক্ষীরায় বরসা নামে একটি এনজিওর প্রধান কার্যালয় ঘেরাও ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন গ্রাহকরা। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত জেলার কয়েকটি উপজেলা থেকে আসা প্রায় এক হাজার মানুষ এনজিওটির প্রধান কার্যালয় ও তাদের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান চায়না বাংলা শপিং কমপ্লেক্সে এসে অবস্থান নেয়।
এ সময় গ্রাহকরা সাতক্ষীরা-যশোর মহাসড়ক অবরোধ করতে চাইলে পুলিশের বাধার মুখে তা পণ্ড হয়ে যায়।
গ্রাহকদের অভিযোগ, বেশি সুদে টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছে বরসা এনজিও। লাভের টাকা দূরে থাক, তাদের মূলধনও ফেরত দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘বরসা’ এনজিও স্বত্বাধিকারী মো. আনিসুর রহিম কয়েক মাস আগে মারা যাওয়ার পর তার ভাই আশিকুর রহমান সংস্থাটি পরিচালনা করে আসছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের কোনো লভ্যাংশ দেননি তিনি। এক সময় গ্রাহকরা মূলধন ফেরত চাইলেও তা দিতে ব্যর্থ হন তিনি। বেশ কয়েকবার তিনি টাকা দেওয়ার জন্য তারিখ দিয়ে আসছিলেন। ২০২১ সালের ২০ মার্চ একবার বরসার কালিগঞ্জের অফিস ঘেরাও ও ভাঙচুর করেছিলেন গ্রাহকরা। এরপর চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি হাজার হাজার গ্রাহক কালিগঞ্জে বরসার অফিস ঘেরাও করে। কিন্তু এর পরও কোনো সুরাহা হয়নি বিষয়টির।
বরসার নির্বাহী পরিচালক আশিকুর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান জানান, প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বরসা এনজিওর সব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রয় করে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। তবে তা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এই আশ্বাসের ভিত্তিতে আজ গ্রাহকরা বেলা আড়াইটার দিকে অবস্থান কর্মসূচি থেকে যে যার বাড়িতে চলে গেছে।
এদিকে কয়েক মাস ধরে পলাতক রয়েছেন বরসার বেশ কয়েকজন এরিয়া ম্যানেজার।
স্থানীয়দের দাবি, ভারতে কৌশলে পালিয়ে গেছেন তাঁরা। তাঁরা হলেন কালিগঞ্জের বদরতলার তুষার সাহা ও কুশল মণ্ডল, রতনপুরের মৃণাল কান্তি ঘোষ, শ্যামনগরের ভেটখালীর নির্মল কুমার ঘোষ ও একই উপজেলার নাকতাড়া এলাকার স্বপন হালদার।