ডাকাতির জন্য ঘরে ঢোকা, বিপদে পড়লে খুন
ডাকাতির জন্য ঘরে ঢোকার পর হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটাতো চক্রটি। এরই মধ্যে আন্তজেলা ডাকাত চক্রের সাতজনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। চক্রটি ডাকাতি করার জন্য বাসা ভাড়া করে বরিশালে থাকতো।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের হেডকোয়াটার্সে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান।
পুলিশ কমিশনার জানান, সিটি করপোরেশন এলাকার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের চহঠা নিজ বাসায় গত ১১ আগস্ট দিবাগত রাতে খুন হন অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা এবং নব বায়ো-হোমিও চিকিৎসালয়ের মালিক অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত) ডা. মঞ্জুর মোর্শেদ (৭০)। হত্যাটি সম্পূর্ণ ক্লুলেস ছিল। এর রহস্য উদঘাটনে নগর গোয়েন্দা পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্ত এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আন্তজেলা ডাকাতদলের একটি চক্র শনাক্ত করা হয়।
এরপরে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার অভিযান চালিয়ে নগরীর শের-ই-বাংলা সড়কের একটি ভাড়া বাসা থেকে তরিকুল ইসলাম শাকিব (২৮) এবং আলমগীর হাওলাদারকে (৪০) আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেন ডাকাতদলের অন্য সদস্যরাসহ ডাকাতির জন্য গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে। আটককৃত দুজনের তথ্যের ভিত্তিতে পটুয়াখালীতে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় অপর সদস্য জামালকে।
পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান বলেন, ‘এই চক্রটি শুধু ডা. মঞ্জুর মোর্শেদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত এমন নয়, এর আগের মাসে অর্থাৎ ৭ জুলাই ফিসারি রোড এলাকার মনোয়ার হোসেনের বাসায় ঢুকে ডাকাতি করে। এ সময়ে তারা নগদ ৫৩ হাজার টাকা এবং ১৪ ভরি স্বর্ণ নিয়ে যাওয়ার সত্যতা স্বীকার করেছে।
দুটি ঘটনাই মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানায় সংঘটিত হয় উল্লেখ করে বিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এদের কাছ থেকে ডাকাতি করতে ঘর ভাঙার যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা নিশ্চিত হয়েছি, সংঘবদ্ধ এই ডাকাত চক্রের কাছে আগ্নেয়াস্ত্রও রয়েছে। সেগুলো উদ্ধার এবং চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
এয়ারপোর্ট থানা এলাকায় ঘটে যাওয়া ঘটনা দুটি নগরীতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে বিধায় পুলিশের তৎপরতা জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় বলে জানান শাহাবুদ্দিন খান।
এর আগে দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত তিন ‘ডাকাত সদস্যকে’ দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মূলত হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ২২ দিনের ব্যবধানে রহস্য উদঘাটনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে মেট্রোপলিটন পুলিশ।