তূর্ণা নিশীথার দুই চালক ঘুমিয়ে ছিলেন : তদন্ত প্রতিবেদন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেল স্টেশনে তূর্ণা নিশীথা ও উদয়ন এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে গঠিত বিভাগীয় পর্যায়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তদন্ত দলের সদস্যরা।
আজ শুক্রবার দুপুরে তদন্ত প্রতিবেদনটি রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. শামছুজ্জামানের কাছে জমা দেন তদন্ত কমিটি। বার্তা সংস্থা বাসস ওই তথ্য জানিয়েছে।
জানা গেছে, দুর্ঘটনার জন্য তূর্ণা নিশীথার ট্রেনচালক তাছের উদ্দিন ও সহকারী চালক অপু দে কে দায়ী করা হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার জন্য দায়ী করা হয়েছে গার্ড আবদুর রহমানকে। দুই চালক ঘুমিয়ে ছিলেন, এ বিষয়ে কমিটি নিশ্চিত হয়েছে। কুয়াশা ও মাটির স্তুপের জন্য স্টেশনের সিগন্যাল দেখতে পাননি বলে চালকরা যে দাবি করেছে, তদন্তে তার সত্যতা মেলেনি।
বিভাগীয় পর্যায়ের গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মো. নাসির উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বাসসকে বলেন, ‘এক ভাগ কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় গত বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার শেষ সময় থাকলেও তদন্ত প্রতিবেদন ঠিক সময়ে জমা দেওয়া যায়নি।’
আজ শুক্রবার আবারও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন ডিজির কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে রেল মন্ত্রী ও ডিজি ঢাকায় সাংবাদিক সম্মেলন করবেন।
গত সোমবার দিবাগত রাত ৩টায় কসবার মন্দবাগ এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা এবং সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রাম অভিমুখী উদয়ন এক্সপ্রেসের মধ্যে ওই সংঘর্ষের ঘটনায় ১৬ জন নিহত হন। ওই ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে অর্ধশতাধিক যাত্রী।
ওই ঘটনায় গত মঙ্গলবার তূর্ণার চালক (লোকো মাস্টার) তাছের উদ্দিন, সহকারী চালক (সহকারী লোকো মাস্টার) অপু দে ও গার্ড আবদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনের সিগন্যালম্যান মোহাম্মদ সারোয়ার জামাল বলেন, ‘উদয়ন এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নিশীথা ট্রেন দুটির এই স্টেশনে ক্রসিং হওয়ার কথা ছিল। সিগন্যাল পেয়ে উদয়ন এক্সপ্রেস চট্টগ্রামের অভিমুখে প্রধান লাইন থেকে ১ নম্বর লাইনে তখন প্রবেশ করছিল। আর ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথাকে মন্দবাগ রেলস্টেশনে থামার জন্য সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল।’
জামাল আরও বলেন, ‘উদয়নের অনেকগুলো বগিই তখন ১ নম্বর লাইনে চলে এসেছিল। এ সময় সিগন্যাল অমান্য করে তূর্ণা নিশীথা স্টেশনে না থেমে প্রধান লাইন বরাবর এগোতে থাকে। এতে উদয়ন এক্সপ্রেসের শেষদিকের কয়েকটি বগির ওপর তূর্ণা নিশীথার কয়েকটি বগি উঠে যায়। এতে উদয়ন এক্সপ্রেসের তিনটি বগি দুমড়েমুচড়ে যায়।’

অনলাইন ডেস্ক