দিনাজপুরে মা ও ছেলেকে অপহরণের মামলা ডিবিতে হস্তান্তর
দিনাজপুরে মা ও ছেলেকে অপহরণ করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়চেষ্টার ঘটনায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সারোয়ার কবীরসহ পাঁচ জনকে আসামি করে করা মামলা পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) শাখায় হস্তান্তর করা হয়েছে। চিরিরবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, গ্রেপ্তার করা পাঁচ জনের মধ্যে কথিত সোর্স ফসিউল আলম দিনাজপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪-এর বিচারক শিশির কুমার বসুর কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল রাত ৮টার দিকে জবানবন্দি দেন তিনি।
গ্রেপ্তার হওয়া সিআইডির এএসপিসহ পাঁচ জনকে গতকাল বিকেলে দিনাজপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪-এ ওঠানো হলে বিচারক শিশির কুমার বসু জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে সিআইডির এএসপিসহ তিন পুলিশ ও মাইক্রোবাসের চালক পলাশকে আদালতে হাজির করা হয়।
অপহরণ এবং মুক্তিপণ আদায়চেষ্টার অভিযোগে সিআইডির এএসপি সারোয়ার কবীর, এএসআই হাসিনুর রহমান, কনস্টেবল আহসানুল ও মাইক্রোবাসের চালক হাবিবুর রহমানকে গত মঙ্গলবার আটক করা হয়। পরে পলাশ নামের অপর এক জনকে অপহরণে সহযোগিতা করার অভিযোগে আটক করা হয়।
অভিযোগ উঠেছে, গত সোমবার রাত আনুমানিক ৯টার দিকে চিরিরবন্দর উপজেলার নান্দেডাই গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে মা জহুরা বেগম ও ছেলে জাহাঙ্গীরকে তাঁদের বাসায় মারধর করার পর মাইক্রোবাসে করে অপহরণ করা হয়। এরপর জহুরা বেগমের স্বজনেরা র্যাব, পুলিশসহ বিভিন্ন জায়গায় আটকের বিষয়ে খোঁজ নেন। কিন্তু কেউ আটকের বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি। এর মধ্যে অপহরণকারীরা মোবাইলে জহুরা বেগমের স্বামী লুৎফর রহমান ও দেবর রমজানের কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
পরে গত মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে হাজি দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মুক্তিপণের অর্থ দিতে যান লুৎফর রহমান ও রমজান আলী। ওই সময় অপহরণকারীরা বুঝতে পারে যে, তাঁদের সঙ্গে সাদা পোশাকে পুলিশ রয়েছে। তখন মাইক্রোবাস নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় দিনাজপুরের ১০ মাইল নামক স্থানে পুলিশ তাঁদের আটক করে। অভিযানে জেলা পুলিশ ও চিরিরবন্দর থানা পুলিশ অংশ নেয় বলে জানা গেছে।
আটকের পর পুলিশ জানতে পারে, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে রংপুর সিআইডির এএসপি সারোয়ার কবীর, এএসআই হাসিনুর রহমান ও কনেস্টবল আহসানুল রয়েছেন। পরে তাঁদের দিনাজপুর ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর আদালতে তোলা হয়।