দেশে চিনির দাম বেশি হওয়ার কারণ জানালেন বাণিজ্যমন্ত্রী
দেশে চিনির চাহিদার প্রায় ৯৯ শতাংশ আমদানি করতে হয় উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় চিনির দাম বেড়েছে।’ এছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর গত এপ্রিল মাস থেকে শুল্কছাড় অব্যাহত না রাখায় ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে বৃদ্ধির কারণে নয় বলেও জানান মন্ত্রী।
আজ রোববার (১৪ মে) রাজধানীর বাড্ডায় সিরাজ মিয়া মেমোরিয়াল স্কুল মাঠে আয়োজিত দেশব্যাপী এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের পরিবারের মাঝে টিসিবির পণ্য বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সয়াবিন তেল, ডাল ও চিনি এসব পণ্যগুলো আমদানি নির্ভর। গত বেশ কিছুদিন ধরেই আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেড়েছে। যেসব পণ্য আমদানি করে দেশে বিক্রি করতে হয় সেগুলোর দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করতে হয়। আমরা চেষ্টা করি আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্য ঠিক রাখার। তারপরও অনেক অসাধু ব্যবসায়ী বেশি দামে বিক্রির চেষ্টা করে থাকে। আমরা এ জন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের দিয়ে বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি।’
টিপু মুনশি বলেন, ‘তেলের উপর শুল্কছাড় অব্যাহত রাখতে এনবিআরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিনির শুল্কছাড় অব্যাহত রাখতেও চিঠি দেয়া হবে। তারা যদি শুল্ক ছাড় অব্যাহত রাখে তাহলে বাজারে তেল ও চিনির দাম কমতে পারে। অন্যদিকে দেশে চিনির চাহিদার প্রায় ৯৯ শতাংশ আমদানি করতে হয়। এজন্য আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে দেশের বাজারে এর প্রভাব পড়ে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নিম্ন আয়ের মানুষ যাতে কম মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করতে পারে সে জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টিসিবির মাধ্যমে তেল, চিনিসহ অন্যান্য পণ্য বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে। প্রতিমাসে এক কোটি পরিবারকে একবার করে পণ্য দেয়া হচ্ছে। টিসিবি এসব পণ্য ক্রয় করে স্বল্প মূল্যে বিক্রি করে থাকে। দাম বাড়লে টিসিবিকেও অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে কিনতে হয়।’
এ লক্ষ্যে সরকার বিরাট অংকের অর্থ ভর্তুকি দিচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, দেশ ও দেশের মানুষের জন্য শেখ হাসিনা যেভাবে চিন্তা করেন তা বিশ্বে বিরল। আসছে নতুন বাজেটেও এক কোটি গরিব, দুঃস্থ অসহায় মানুষের জন্য স্বল্প মূল্যে খাদ্য পণ্য বিতরণ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই মানবিক উদ্যোগকে সফল করতে জনপ্রতিনিধিসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেন মন্ত্রী।
ডিজিটাল কার্ড কবে নাগাদ চালু করা হবে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে ডিজিটাল দেশে রূপান্তরিত করেছেন। যার সুফল দেশের মানুষ উপভোগ করছে। আমরা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে টিসিবির এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডকে স্মার্ট কার্ডে রুপান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এজন্য আমরা সরকারি একটা প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়েছি, তারা কাজ করছে। ত্রুটিমুক্ত স্মাট কার্ড উপহার দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য। এ জন্য একটু সময় বেশি লাগছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে কাজের অনেকটাই শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।