দেশে যত খারাপ কাজ হয়েছে, সবই আ.লীগের আমলে : নজরুল ইসলাম
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের হাত-পা ভেঙে দিয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘দেশের যত খারাপ কাজ হয়েছে সবই আওয়ামী লীগের সময়।’
আজ বুধবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর নয়াপল্টনে একটি রেস্তোরাঁয় ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘আওয়ামী লীগের কাছেই গণতন্ত্র একমাত্র নিরাপদ’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘অথচ চুয়াত্তর সালে প্রথম সংবিধান সংশোধন করে যত কালাকানুন করেছে আওয়ামী লীগ। যশোরে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সমাবেশে হামলা হয়েছে আওয়ামী লীগের সময়। আসলে দেশের যত খারাপ কাজ হয়েছে সবই আওয়ামী লীগের সময়। এভাবে পর্যায়ক্রমে তারা বাকশাল কায়েম করেছিলো। ওয়ান ইলেভেনের সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে ক্ষমতায় এসেছিল। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনের নামে তারা প্রহসন করেছে। এভাবে গণতন্ত্রের হাত, পা ভেঙে দিয়ে বলছে তাদের হাতেই গণতন্ত্র নিরাপদ!’
জিয়া পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে এই আলোচনা সভা, দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম খান দলের নেতাকর্মী ও জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যানকে হয়রানি প্রসঙ্গে বলেন, ‘পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সেদিন ছাত্র-যুবক-কিশোর সবাই যুদ্ধ করেছেন, লড়াই করেছেন। প্রশিক্ষিত বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলাম। যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা দেশটা স্বাধীন করেছিলাম সেটা আজ ভূলুণ্ঠিত। শুধু রাষ্ট্র ক্ষমতা ধরে রাখার চেতনা দেশের সর্বনাশ করেছে। আজকে যারা দেশ স্বাধীন করেছেন তাদেরকে অসম্মান ও হয়রানি করা হচ্ছে।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বড় অদ্ভুত ব্যাপার বাংলাদেশে। এখানে বলা হয় বাংলাদেশ নাকি খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। অথচ খাদ্য আমদানি করতে হয়। বলা হয় বিদ্যুত নাকি ফেরি করে বিক্রি করা হবে। কিন্তু বাস্তবে কি অবস্থা? আর আমরা শুধু খাম্বা লাগিয়েছিলাম সেটাই দোষ!’
নজরুল ইসলাম খান নেতাকর্মী ও পেশাজীবীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের লড়াইয়ের কোনো বিকল্প নেই। যদি আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ভালোবাসি, যদি তারেক রহমানকে পাশে চাই এবং গণতন্ত্রকে চাই তাহলে আমাদেরকে লড়তে হবে। এই ফ্যাসিস্ট ও অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয়ী হতে হবে। ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশ বিএনপি ও তারেক রহমানের হাত ধরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে।’
জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ড. এমতাজ হোসেনের সঞ্চালনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান, সংগঠনের নেতা ডা. মজিবুর রহমান হাওলাদার, এডভোকেট দেওয়ান মাহফুজুর রহমান, আব্দুল্লাহিল মাসুদ, আবুল কালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম শহীদ, মো. রবিউল ইসলাম, শহিদুল হক শহিদ। ইফতার মাহফিলে দোয়া পরিচালনা করেন অধ্যাপক ড. মঈনুল হক।
এছাড়াও জিয়া পরিষদের নেতা অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম, খান মো. মনোয়ারুল ইসলাম শিমুল, অধ্যাপক ড. আবু জাফর প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।