নদীগর্ভে পুরোনো মসজিদ, ভাসমান মসজিদ পেয়ে খুশি মুসল্লিরা
হাওলাদার বাড়ির পুরোনো মসজিদটি খোলপেটুয়া নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নামাজ আদায়ে অসুবিধা হচ্ছিল মুসল্লিদের। তাই ওই মসজিদটির বিকল্প হিসেবে খোলপেটুয়া নদীতে ভাসছে কাঠের তৈরি আরেকটি মসজিদ। সেখানেই গ্রামের মুসল্লিরা নামাজ আদায় করছেন। এর মধ্যেই আজ শুক্রবার জুমার নামাজ পড়েছেন তাঁরা।
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়ন। ভয়াল সিডর, আইলা, আম্পান এবং সর্বশেষ ইয়াসের দাপটে কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়ার বেড়িবাঁধ বারবার ভেঙে পড়েছে।
প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জানান, জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে প্রতাপনগর ইউনিয়নের ২২টি গ্রামের ৩৬ হাজার মানুষ। সেখানেই ছিল হাওলাদার বাড়ির মসজিদটি। সে মসজিদটিও হারিয়েছে তার অস্তিত্ব। আর তাই, ভাসমান মসজিদটিতে নামাজ পড়ছেন মুসল্লিরা।
গ্রামবাসী জানান, তাঁরা হাওলাদার বাড়ির মসজিদে দীর্ঘদিন ধরে নামাজ পড়ে আসছিলেন। কিন্তু, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের থাবায় ডুবন্তপ্রায় মসজিদটি আজ শুক্রবার খোলপেটুয়া নদীগর্ভে পুরোপুরি বিলীন হয়ে গেছে। এ মসজিদের ইমাম হাফেজ মঈনুর রহমানসহ গ্রামবাসী গত সোমবার পর্যন্ত নোনা পানিতে সাঁতার কেটে ডুবন্তপ্রায় মসজিদে নামাজ পড়ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ অন্যান্য মিডিয়ার মাধ্যমে এ খবর পৌঁছায় সারা দেশে। এতে সাড়া দেয় চট্টগ্রামের একটি প্রতিষ্ঠান।
মসজিদের ইমাম হাফেজ মঈনুর রহমান জানান, চট্টগ্রামের শামসুল হক ফাউন্ডেশনের প্রকৌশলী মো. নাসিরউদ্দিন নিজে সেখানে গিয়ে একটি ভাসমান মসজিদ তৈরি করে দিয়েছেন। নাম দেওয়া হয়েছে আলহাজ্ব শামসুল হক মসজিদে নুহ (আ.)। আটটি বড় আকারের ড্রামে ৬০ ফুট লম্বা ও ১৫ ফুট প্রস্থের একটি নৌকার ওপর রয়েছে মসজিদটি। অজুখানা, সৌর বিদ্যুৎ সংযোগসহ সব ধরনের সুবিধা রয়েছে সেখানে।
হাওলাদারবাড়ি এলাকার ২৫টি পরিবারসহ আশপাশের এলাকা থেকে আসা মুসল্লিরা গত মঙ্গলবার থেকে মসজিদটিতে নামাজ পড়ছেন। প্রায় ৬০ জনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এই মসজিদে আজ শুক্রবার জুমার নামাজে অংশ নেন তাঁরা।
মসজিদটির ইমাম জানান, গ্রামবাসী ভাসমান মসজিদটি পেয়ে অনেক খুশি। তাঁদের কষ্ট লাঘব হয়েছে। মসজিদ কমিটির সভাপতি মৌলভী এবাদুল সানা, সেক্রেটারি আবদুর রাজ্জাক এটির উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন।