নবাবগঞ্জে সেলিনা নূর-বাডাস স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
দেশ-বিদেশের মানুষকে উন্নত চিকিৎসাসেবা দিতে বিশ্বমানের আধুনিক চিকিৎসা কমপ্লেক্স ‘সেলিনা নূর-বাডাস স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’ গড়ে তোলা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে ঢাকার অদূরে নবাবগঞ্জ থানার চুড়াইন ইউনিয়নে ২৫ বিঘা জমির ওপর গঠে তোলা হচ্ছে বিশ্বমানের এই আধুনিক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
গতকাল শুক্রবার সেলিনা নূর-বাডাস স্বাস্থ্য কমপেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ইউনিক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহা. নূর আলী বলেন, এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকবে এক হাজার শয্যার জেনারেল হাসপাতাল, ২০০ শয্যার ক্যানসার ইনস্টিটিউট ও ডরমেটরি। এ ছাড়া মেডিক্যাল কলেজ, নার্সিং কলেজ ও ইনস্টিটিউট, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ও খেলার মাঠও থাকবে। তিনি বলেন, এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে সেলিনা নূর-বাডাস ট্রাস্ট। আগামী তিন বছরের মধ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সাধারণ মানুষের জন্য আউটডোর চালু হবে। আর আট বছরের মধ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরো কাজ শেষ করা হবে। কাজে বিলম্ব করার কোনো সুযোগ নেই। আমার সহধর্মীণী ইউনিক গ্রুপের চেয়ারপারসন সেলিনা আলীর কাছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য জমি চাইতেই একবাক্যে জমি দান করে দিয়েছেন। এই জমিতে সংকুলান না হলে প্রয়োজনে আরও জমির ব্যবস্থা করা হবে। তবুও বিশ্বমানের সব সুযোগ-সুবিধাসহ এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন গণপরিষদের সাবেক সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আবু মোহাম্মদ সুবেদ আলী টিপু, মুক্তিযোদ্ধা রইস উদ্দিন বাচ্চু, যুগ্ম সচিব সেলিম খান, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন ঝিলু, দেওয়ান আওলাদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন মনজু প্রমুখ।
মোহা. নূর আলী আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমাদের দেশের মানুষ চিকিৎসা নিতে যায়। এর প্রধান কারণ হচ্ছে সেই দেশের চিকিৎসার মান ভালো। এ ছাড়া ডাক্তারি পড়তে আমাদের ছেলেমেয়েরা বিদেশে যায়। কিন্তু বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা আমরা দিতে পারলে বিদেশিরা আমাদের দেশে চিকিৎসা নিতে আসবে। পাশাপাশি বিদেশি ছেলেমেয়েরাও মেডিকেল কলেজে পড়তে আসবে। আমরা সে ধরনের বিশ্বমানের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করতে চাই। যাতে বিদেশিরা আমাদের এখানে আসেন।
নূর আলী আরও বলেন, নবাবগঞ্জের মাটির প্রতি আমার অনেক ঋণ রয়েছে। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের মাধ্যমে এটা হবে সেই ঋণ শোধের প্রথম ধাপ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির (বাডাস) সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, নবাবগঞ্জ এলাকার মানুষের স্বপ্ন পূরণ হবে। এ জায়গাটা ঢাকা থেকে দূরেও নয়, আবার কাছেও নয়। এমন জায়গা পাওয়া খুবই দূরহ। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য খুবই ভালো যায়গা। আমাদের চিন্তা রয়েছে, এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হবে বিশ্বের মধ্যে অত্যাধুনিক। এখানে উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। পাশাপাশি নার্সিং ইনস্টিটিউট হবে। যেখানে উন্নতমানের নার্স তৈরি করা হবে। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নার্সের সংকট রয়েছে। ভালো নার্স পাওয়া কঠিন। অনেক চাহিদা রয়েছে। এখানে ভালোমানের নার্স তৈরি হবে। এবং তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানুষের সেবা দেবে। তাদের মাধ্যমে দেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করবে। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এমনভাবে তৈরি করা হবে যাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে চিকিৎসাসেবা নিতে আসে। পাশাপাশি পড়ালেখা করতে আসে।
ইউনিক গ্রুপের উপদেষ্টা সাবেক সচিব ড. খন্দকার শওকত হোসাইন সূচনা বক্তব্যে বলেন, গেল দুই বছরের চেষ্টা আজ বাস্তবায়ন হচ্ছে। ইউনিক গ্রুপের ব্যবস্থানা পরিচালক মোহা. নূর আলী সাহেবের স্বপ্ন ছিল তার এলাকায় বিশ্বমানের স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স তৈরি করার। তার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে কেন্দ্র করে এ অঞ্চলের চিত্র পাল্টে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।