নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাসুদ রানা একই ইউনিয়নের এক নারী উদ্যোক্তাকে যৌন হয়রানি করায় সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। 

আজ সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় উপসচিব মোহাম্মদ সাঈদ-উর-রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা যায়।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ রানার বিরুদ্ধে একই ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা জাকিয়া সুলতানাকে যৌন হয়রানি এবং অনৈতিক প্রস্তাবের অভিযোগ স্থানীয় তদন্ত সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ৩৪ (ঘ) ধারা অনুযায়ী জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেছেন।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, চেয়ারম্যান মাসুদ রানা কর্তৃক সংঘটিত অপরাধমূলক কার্যক্রম ইউনিয়ন পরিষদসহ জনস্বার্থের পরিপন্থী বিবেচনায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ৩৪ (৪) (ঘ) ধারার অপরাধ সংঘটিত করায় একই আইনের ধারা ৩৪ (১) অনুযায়ী উল্লেখিত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে তার পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

নারী উদ্যোক্তার করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চেয়ারম্যান মাসুদ রানা গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে থেকে ওই নারী উদ্যোক্তাকে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করে আসছেন। তিনি মুঠোফোনে ও বেশ কিছু চিঠির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দিচ্ছেন। ওই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেড়ে নেন এবং কিছু গোপন তথ্য ডিলিট করে দেন। পরে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে মোবাইল ফোনটি তিনি ফেরত দেন। তিনি একজন বিবাহিত নারী এবং তাঁর যমজ কন্যা সন্তান রয়েছে। চেয়ারম্যানের এমন প্রস্তাবের ফলে কর্মক্ষেত্রে ও সাংসারিক কলহের সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদও ঘটেছে। এমন অবস্থায় ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে কাজ এবং সামাজিক চলাচলে বাধার সৃষ্টি হয়েছে। নানাভাবে হেয়প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১৩ জুন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক, জেলা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছিলেন।

সাময়িক বরখাস্তের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মাসুদ রানা বলেন, ‘আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে আমি আইনিভাবে লড়ব। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয়। এটা চক্রান্ত।’

বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক উত্তম কুমার রায় বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি সন্ধ্যায় পেয়েছি। এখন যিনি প্যানেল চেয়ারম্যান আছেন, তিনি ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন।’