নিউ মার্কেটে মোরসালিন নিহতের ঘটনায় আরেক মামলা, আসামি ১৫০
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষে মোরসালিন নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। নিহতের ভাই নুর মোহাম্মদ বাদী হয়ে নিউ মার্কেট থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন। এই মামলায়ও আসামিরা অজ্ঞাত।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নুর মোহাম্মদ মামলাটি করেন বলে জানিয়েছেন নিউ মার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স ম কাইয়ুম।
স ম কাইয়ুম বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মোরসালিনের মৃত্যুর ঘটনায় তার ভাই নুর মোহাম্মদ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। এ মামলার সব আসামি অজ্ঞাত। মোট চারটি মামলায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে, গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি আমরা।’
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউ মার্কেটের দোকানকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের সময় মোরসালিন (২৬) আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান। তিনি একটি দোকানের কর্মচারী ছিলেন। এই নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে বুধবার দিনগত রাতে রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় তিনটি মামলা করা হয়েছে। তিন মামলায় মোট আসামি করা হয়েছে এক হাজার ৪২৪ জনকে। তিন মামলায় কুরিয়ারকর্মী নাহিদকে হত্যা, অন্যদের হত্যাচেষ্টা, জখম, ককটেল বিস্ফোরণ, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয় ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, নিউ মার্কেট থানার পুলিশ পরিদর্শক ইয়ামিন কবীর সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, পুলিশের ওপর আক্রমণ, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে জখম ও ভাঙচুরের অভিযোগ এনে একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় ২৪ জন এজাহারনামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ৩০০ ব্যবসায়ী-কর্মচারী এবং ঢাকা কলেজের ৬০০ থেকে ৭০০ শিক্ষার্থীকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
নিউ মার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মেহেদি হাসান বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, সরকারি সম্পদসহ জানমালের ক্ষয়-ক্ষতির লক্ষ্যে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো এবং এ কাজে সহায়তার করার অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন।
নিউ মার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত হন কুরিয়ার সার্ভিসকর্মী নাহিদ। মো. সাইদ নামের নাহিদের এক স্বজন একটি মামলা করেছেন। পরস্পরের যোগসাজশে খুন করার অভিযোগ এনে ১৫০ থেকে ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে এ মামলায়।
গত সোমবার রাত ১২টায় শুরু হয় ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ। আড়াই ঘণ্টা সংঘর্ষের পর দিন মঙ্গলবার দিনভর নিউ মার্কেট এলাকায় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলে। জানা গেছে, দুই খাবারের দোকানের লোকজন নিজেদের মধ্যে কোন্দলের জেরে পরবর্তীকালে সেখানে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের জড়ানো হয়। যদিও এ সংঘর্ষের কারণ হিসেবে অন্য আরেকটি তথ্য জানা গেছে। বলা হচ্ছে, খাবার খেয়ে শিক্ষার্থীদের টাকা দিতে না চাওয়া নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত।
সংঘর্ষ শুরুর পর দিন মঙ্গলবার সকাল থেকে নিউ মার্কেটসহ আশপাশের সব দোকানপাট বন্ধ ছিল। গত বুধবারও বন্ধ ছিল মার্কেট। বুধবারও দুপক্ষ ছিল মুখোমুখি অবস্থানে। ঢাকা কলেজ এলাকায় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। তবে, সংঘর্ষে জড়ায়নি কোনো পক্ষই। অবশেষে আজ শুক্রবার ও গতকাল বৃহস্পতিবার ১০টা থেকে নিউ মার্কেটসহ আশপাশের মার্কেটগুলো খুলতে শুরু করেছে।