নিউ মার্কেট এলাকায় সংঘর্ষে প্রধান আসামি বিএনপির সাবেক সভাপতি
নিউ মার্কেটে শিক্ষার্থী ও দোকানিদের সংঘর্ষের ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে জখম ও ভাঙচুরের ঘটনায় নিউমার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেনকে ১ নম্বর আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ।
নিউ মার্কেট থানার পুলিশ পরিদর্শক ইয়ামিন কবীর এসব অভিযোগ এনে মামলাটি করেছেন। এ মামলায় আরও ২৩ জন এজাহারনামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ৩০০ ব্যবসায়ী-কর্মচারী এবং ঢাকা কলেজের ৬০০ থেকে ৭০০ শিক্ষার্থীকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
ইয়ামিন কবীর এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলার এজাহারে আরও যে ২৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন আমির হোসেন আলমগীর, মিজান, টিপু, হাজি জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারী, হাসান জাহাঙ্গীর মিঠু, হারুন হাওলাদার, শাহ আলম শন্টু, শহিদুল ইসলাম শহিদ, জাপানি ফারুক, মিজান ব্যাপারী, আসিফ, রহমত, সুমন, জসিম, বিল্লাল, হারুন, হেহা, মনির, বাচ্চু, জুলহাস, মিঠু, মিন্টু ও বাবুল।
এ ছাড়া হত্যা, হত্যাচেষ্টা, জখম, ককটেল বিস্ফোরণ, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুরের অভিযোগে ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা করা হয়েছে।
এ দুটি মামলায় একটির বাদী নিউ মার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মেহেদি হাসান। তিনি বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, সরকারি সম্পদসহ জানমালের ক্ষয়-ক্ষতির লক্ষ্যে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো এবং এ কাজে সহায়তার করার অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন।
নিউ মার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত হন কুরিয়ার সার্ভিসকর্মী নাহিদ। অপর মামলাটির বাদী মো. সাইদ। তিনি নাহিদের স্বজন। মামলাটিতে পরস্পরের যোগসাজসে খুন করার অভিযোগ এনে ১৫০ থেকে ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
পুলিশের নিউ মার্কেট অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহেনশাহ মাহমুদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্য ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এজাহারে আসামিদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। কারও বিরুদ্ধে অযাচিত অভিযোগ আনা হয়নি।’
সংঘর্ষ শুরুর পরদিন এনটিভি অনলাইন ‘যে কারণে নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশ করে। সেখানে ঘটনার কারণ অসুসন্ধান করতে গিয়ে যে তথ্য পাওয়া যায় তা হলো, ওয়েলকাম ও ক্যাপিটাল নামের দুটি ফাস্টফুডের দোকানের নিজেদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার কথা। এ বাকবিতণ্ডার কারণেই মূলত সংঘর্ষের সূত্রপাত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন দোকানি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘ইফতারের সময় রাস্তায় টেবিল পাতাকে কেন্দ্র করে ওয়েলকাম ফাস্টফুডের কর্মচারী বাপ্পী ও ক্যাপিটালের কর্মচারী কাওসারের মধ্যে বাকবিতণ্ডার শুরু।’
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে এনটিভি অনলাইনের পক্ষ থেকে ওয়েলকাম ও ক্যাপিটালের ফাস্টফুড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওয়েলকাম ও ক্যাপিটাল নামে যে দুটি ফাস্ট ফুড দোকানের কর্মচারীর মধ্যে বিরোধের জেরে সংঘর্ষের সূত্রপাত, সেই দোকান দুটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে বরাদ্দ নিয়েছিলেন মকবুল হোসেন। পরে দোকান দুটি তিনি ভাড়া দেন।
নব্বইয়ের দশকে সিটি করপোরেশন থেকে দোকান দুটি ভাড়া নেওয়ার কথা জানিয়ে নিউ মার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেন আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, আমিও রকম একটা মেসেজ পেয়েছি। কিন্তু গত চার মাস তো আমি ওই এলাকাতেই যাইনি। সেখানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, জখম, ভাঙচুরের প্রশ্নই আসে না।