নেত্রকোনায় স্কুলছাত্রী হত্যায় অভিযুক্ত কাউছার গ্রেপ্তার
নেত্রকোনার বারহাট্টায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে স্কুলছাত্রী মুক্তি রাণী বর্মণকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত বখাটে যুবক কাউছার মিয়াকে (১৯) গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। গতকাল বুধবার (৩ মে) বিকেল ৩টার দিকে তাকে উপজেলার বাউসী ইউনিয়নের প্রেমনগর ছালিপুরা নিজ গ্রামের একটি জঙ্গল থেকে কাউছারকে আটক করে জেলা পুলিশের সম্মিলিত একটি দল।
বুধবার (৩ মে) বিকেল ৪টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পুলিশ তৎপর ছিল। পুলিশের একাধিক দল কাজ করেছে। বিকেল ৩টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বারহাট্টার বাউসী ইউনিয়নের প্রেমনগর ছালিপুরা গ্রামের একটি জঙ্গল থেকে কাউছারকে আটক করে জেলা পুলিশের সম্মিলিত একটি দল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্কুলছাত্রী মুক্তি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে কাউছার।’
এর আগে দুপুরে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ বারহাট্টাসহ কয়েকটি সংগঠনের উদ্যোগে কাউছারের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় বক্তব্য দেন বারহাট্টা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাইনুল হক কাশেম, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ বারহাট্টা শাখা ব্যবস্থাপক সুরজিত ভৌমিক, জেলা উদীচী সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাংবাদিক ভজন দাস, বারহাট্টা প্রেসক্লাবের সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ বাবুল, নারী নেত্রী কোহিনূর বেগম, মৃণাল চক্রবর্তী প্রমুখ।
নিহত স্কুলছাত্রী মুক্তি রাণী বর্মণ (১৬) উপজেলার বাউসী ইউনিয়নের প্রেমনগর ছালিপুরা গ্রামের নিখিল বর্মণের মেয়ে ও প্রেমনগর ছালিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। মঙ্গলবার (২ মে) উপজেলার বাউসী ইউনিয়নের প্রেমনগর ছালিপুরা গ্রামে বেলা সোয়া ২টার দিকে হামলা ঘটনার পর বিকেল ৪টার দিকে মারা যান মুক্তি।
অভিযুক্ত বখাটে হচ্ছেন—একই গ্রামের শামছু মিয়ার ছেলে, মো. কাউছার মিয়া।
এ বিষয়ে বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোকন কুমার সাহা বলেন, ‘বুধবার রাতে নিহত স্কুল শিক্ষার্থীর বাবা অভিযুক্ত কাউছারকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। এর আগেই দুপুরে পুলিশের একাধিক দল অভিযান চালিয়ে কাউছারকে ধরতে সক্ষম হয়।’
ওসি খোকন আরও বলেন, ‘মুক্তি বিদ্যালয় ছুটির পর তার দুই বান্ধবীর সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে কাউছার অতর্কিতভাবে দা দিয়ে এলাপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে মুক্তিকে। স্থানীয়রা তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে দ্রুত বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য মুক্তিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর কথা বলেন। ময়মনসিংহ হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যায় মুক্তি।’